
Truth Of Bengal: প্রয়াগরাজ মহাকুম্ভ মেলা সনাতন ঐতিহ্যের অন্যতম প্রাচীন উৎসব। সবচেয়ে বয়স্ক সন্ন্যাসী হিসাবে ব্রহ্মচারী স্বামী শিবানন্দও পৌঁছেছেন এই মেলায়। বর্তমানে তাঁর বয়স ১২৯ বছর। তাঁকে দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। স্বামী শিবানন্দ যোগ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কারও পেয়েছেন। তাঁর হাতে এই রাষ্ট্রীয় সম্মান তুলে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
আধার কার্ড অনুযায়ী স্বামী শিবানন্দের জন্ম তারিখ ৮ আগস্ট ১৮৯৬। ২০২৫ সালের মহাকুম্ভের সময় সঙ্গমের বালুচরে স্বামী শিবানন্দের শিবির স্থাপন করা হয়েছে। ১২৯ বছরের স্বামী শিবানন্দ একেবারে সুস্থ এবং সবার সঙ্গে কথাও বলছেন। তিনি সর্বদা মানুষকে যোগব্যায়ামে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেন। সমাজের জন্য কাজ, আনুগত্য এবং যোগের প্রতি নিবেদন ছাড়াও, তাঁর সেবার মনোভাবের জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তিনি পদ্মশ্রীতে ভূষিত হয়েছেন।
বাবা শিবানন্দ ১৮৯৬ সালের ৮ আগস্ট বাংলাদেশের শ্রী হাতা বিভাগের হরিগঞ্জ জেলার বিখ্যাত ঠাকুরবাদী পরিবারের ব্রাহ্মণ সন্ন্যাসী গোস্বামী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শ্রীনাথ গোস্বামী এবং মাতার নাম ভগবতী দেবী। বাবার প্রথম জীবন কেটেছে আর্থিক সমস্যায়। তাঁর বাবা-মা ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কখনও কখনও ভিক্ষা না পেলে পরিবার ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ত। বাবা ছোটবেলা থেকেই নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। তাঁর বাবা-মা সন্তানদের শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক বিকাশের সম্পূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে নবদ্বীপের বাসিন্দা একজন বৈষ্ণব সাধুর কাছে হস্তান্তর করেছিলেন। পরে সেই সাধুই স্বামী শিবানন্দের গুরু হন। তাঁর একটি বোনও ছিল, যে মারা গিয়েছিল। ছোটবেলায় স্বামী শিবানন্দের বাবা-মা মারা যান। এর পরে, তিনি নিজের সঙ্গে তাঁর পূর্বপুরুষের পুজো করা নারায়ণ শিলা এবং তাঁর মায়ের পুজো করা শিবলিঙ্গ নিয়ে যান এবং নবদ্বীপে তাঁর গুরুর আশ্রমে ফিরে আসেন। গুরুর মৃত্যুর পর থেকে বাবা শিবানন্দ তাঁর দেখানো পথেই মানবসেবায় নিয়োজিত হন।
প্রতিদিন ভোর তিনটায় স্বামী শিবানন্দ শয্যা ত্যাগ করেন। এরপর সারাদিন ধরে চলে জপ-তপ, ধ্যান, জগতের মঙ্গল কামনা করা, সেবা করা এবং সকল প্রকার নিঃস্বার্থ কাজ। এরপর রাত ৯টায় বিশ্রামে যান তিনি। তাঁর খাদ্যতালিকায় কেবল সেদ্ধ শাক-সবজি এবং কয়েকটি মিষ্টি রয়েছে। বাবা ভাজা খান না। বাবার প্রিয় কাজ হল দরিদ্র, দুস্থ ও দুঃখীকে সাহায্য করা এবং সেবা করা। বাবা বলেন জীবের নিঃস্বার্থ সেবাই ভগবানের সেবা।