শিক্ষা

ভিক্ষা করে চলত পেট, রূপকথার গল্পকেও হার মানাবে জয়দেব মুনিয়ার কাহিনী

Begging stomach, the story of Jaydev Munia will beat the fairy tale

The Truth Of Bengal:  ভাগ্যযে মানুষকে কোথা থেকে কোথায় পৌঁছে দেয় তা কেউ আগে থেকে বলতে পারেনা। ভিক্ষা থেকে সফল ব্যবসায়ী। না না কোন রূপকথার গল্প নয়, এ এক বাস্তব জীবন কাহিনী। আর বাস্তবতায় এমনটাই করে দেখিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামের এক নম্বর ব্লকের সোনাচুড়ার বাসিন্দা জয়দেব মুনিয়া। একসময় নিজের পেট চালানোর জন্য ভিক্ষা করতে হতো তাকে, তবে আজ মাছের ব্যবসা করে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী।

প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে জয়দেব মুনিয়া ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারিয়েছেন। যখন তার মাথার ওপর থেকে ছাদ সরে গেছিল তখন তার পাশে এসে দাঁড়ায়নি পরিবারের বাকি সদস্যরা এবং আত্মীয়-স্বজনরা। তাই পেটের খিদে মেটাতে শুরু করতে হয়েছিল ভিক্ষা। এরপর কিছুটা বড় হতেই নিজের গ্রাম ছেড়ে চলে আসেন কলকাতায়। মহানগরে এসে কি করবেন বুঝতে না পেরে প্রথমে তিনি অন্যের বাড়িতে পরিচারকের কাজ শুরু করেন। তবে এতে পেটের খিদে মিটলেও মেটেনি মনের খিদে। এরপর এক মাছ বিক্রেতার সাথে পরিচয় হয় জয়দেবের। তার সাথে কাজ করে কিছুটা আয়ও হতো। একটু একটু করে জানার পর জয়দেব নিজেই একদিন মাত্র ২৮ টাকা নিয়ে নিজের মাছের ব্যবসা শুরু করেন। এরপর থেকে বদলে যায় তাঁর জীবন। আর পেছন ফিরে তাকাতেও হয়নি তাঁকে।

এরপর ফের মহানগর থেকে নন্দীগ্রামে ফিরে আসেন জয়দেব। নিজের গ্রামে ফিরে মাছ বিক্রিকেই নিজের পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। আজ মাছ বিক্রি করে তিনি একটা সফল ব্যবসায়ী। শুধু তাই নয় এই ব্যবসা চালিয়ে জমি জমা থেকে শুরু করে নিজের বাড়িও তৈরি করেছেন তিনি। পরবর্তীকালে তিনি বিয়েও করেন। তারপর ব্লক মৎস্য দপ্তরের সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনায় মাছ ফেরি করার জন্য মোটর সাইকেল এবং শীত তাপ নিয়ন্ত্রিত মাছের বাক্স করেন। জয়দেব মুনিয়া জানান, শুধুমাত্র মাছের ব্যবসা করেই তিনি তাঁর তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ব্লক মৎস্য চাষ সম্প্রসারণ আধিকারিকের সহযোগিতায় তার ব্যবসায় আরো লক্ষ্মী লাভ হয়। আজ এই সফল ব্যবসায়ী জয়দেব মুনিয়া হয়ে উঠেছেন বহু মানুষের অনুপ্রেরণা। বহু মানুষ মাছকে কেন্দ্র করে জীবিকা গ্রহণের নতুন দিশা খুঁজে পেয়েছেন।

Related Articles