সম্পাদকীয়

কেন ধারাবাহিক এই কুৎসা, কেন বাংলার এই বদনাম?

Why this continuous slander, why this bad name for Bengal?

Truth Of Bengal: অবশেষে রায় দান হল। প্রমাণ হল কলকাতা পুলিশ যে পথে তদন্ত করেছিল সেটাই যথার্থ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হোক। জয়নগর, ফারাক্ক ও গুরাপে নির্যাতিতারা বিচার পেয়েছেন দ্রুত। আরজিকরের ঘটনায় কিছুটা দেরি হলেও শেষ পর্যন্ত তদন্ত প্রক্রিয়া গুটিয়ে আনে সিবিআই।

প্রথমে কলকাতা পুলিশের তদন্ত এবং পরবর্তীতে সিবিআই তদন্ত – আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে সঞ্জয় রায়ের নামেই সিলমোহর দেয়। এবং শেষ পর্যন্ত শিয়ালদা সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত এই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে। তবে গত ৯ আগস্ট এর পর থেকে যেভাবে বাংলার সরকারকে অপদস্থ করা হয়েছে, বিরোধী রাজনীতির নামে মিথ্যাচারে ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে তা ঘৃন্যতম রাজনৈতিক চক্রান্ত হিসাবে বাংলার ইতিহাস মনে রাখবে।

যেভাবে জুনিয়ার ডাক্তারদের আন্দোলনে মদত দেওয়া, মিথ্যার বেসাতি রচনা করা, কর্মবিরতির নামে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়া, রাত জাগোর নাম করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলাকে বিপর্যস্ত করা – গত কয়েক মাস ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে গিয়েছে বিরোধীরা। এত কুৎসা, এত বদনামের পরও রাজ্য প্রশাসন লক্ষ্যে ছিল অটুট। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি মেনে নিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তের সায় বা জুনিয়র চিকিৎসকদের অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়া সবক্ষেত্রেই নরম মনোভাব দেখিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।

রাজ্য সরকার বারবার সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের মনে করিয়ে দিয়েছে সাধারণ গরিব মানুষের চিকিৎসাটা যেন যথাযথ হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের অবহেলায় ও অনুপস্থিতিতে বহু রোগীর মৃত্যু ঘটেছে এই আন্দোলন পর্বে। আবার পরবর্তীতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের অবহেলার জ্বলন্ত ছবি ফুটে ওঠে। সরকারি হাসপাতালে অপারেশন না করে সেই নির্দিষ্ট সময়ে বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসায় ছিলেন ব্যস্ত। জুনিয়ার চিকিৎসকরা করেন অপারেশন।

এর পরিণতিতে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ১২ জন চিকিৎসক ও জুনিয়র চিকিৎসককে সাসপেন্ড করেছে রাজ্য সরকার। আরজি কর আন্দোলনের সময় যে নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছে সরকার অন্যদিকে এই অবহেলায় কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। যারা একাধিক দাবি-দাওয়া নিয়ে সরকারকে প্যাঁচে ফেলতে চেয়েছিলেন তাদের এই গাফিলতি যে মেনে নেওয়া যায় না তা এক বাক্যে স্বীকার করবেন বাংলার আমজনতা।

অন্যদিকে আরজিকর মামলায় অভিযুক্তের চিহ্নিতকরণের যে কাজটি ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে কলকাতা পুলিশ করে দেখিয়েছিল আজ সেই দক্ষতার ফলেই সুবিচার পেলেন নির্যাতিতার পরিবার। অবশ্য বিরোধীরা যে কুৎসার বাতাবরণ তৈরি করেছিল, গল্পের গরু গাছে তুলে নতুন নতুন গল্প রচনা করেছিল তার যবনিকা পতন ঘটল। শিয়ালদহ আদালত এই মামলায় সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করল।

Related Articles