সম্পাদকীয়

ধরিত্রী মা-কে রক্ষার দায়িত্ব আমাদের

It is our responsibility to protect Mother Earth

জয়দেব দেবাংশী: পৃথিবী আজ ভীষণ অসুস্থতার মধ্যে থেকেও কোনওরকমে তার কোলে স্থান দিয়ে চলেছে পশু-পাখি, কীটপতঙ্গ, বৃক্ষ এবং সৃষ্টির প্রথম শ্রেণির প্রাণ মনুষ্যকূলকে। দুঃখের বিষয় এক শ্রেণির অসভ্য, জল্লাদ মানুষের দ্বারা ধরিত্রী মা দুঃখে কাতর, যন্ত্রণায় জর্জরিত, তবে এইভাবে যদি দীর্ঘদিন ধরিত্রী মায়ের উপর অত্যাচার চলে, তা হলে ধরিত্রী মা জীবকুলকে হয়তো আর রক্ষা করতে পারবে না।

পৃথিবী আজ উষ্ণায়নের বিপর্যস্ত, কার্বন নিঃসরণের মাত্রা হ্রাস করে শিল্প বিপ্লবকে পূর্ব অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল প্যারিস চুক্তি। কিন্তু রূপায়ণের জায়গা অধরা, শুধু আলোচনার টেবিল। নিয়মিত বৃহৎ কারখানা হতে অবাধে রাসায়নিক পদার্থ মিশছে বাতাসে, নদীতে, রোধ করার জন্য কঠোর আইনেরও ব্যবস্থা আছে, কিন্তু পদক্ষেপের জায়গা একেবারেই ক্ষীণ। বৃক্ষরাশিকে নিয়মিত ছেদন করা হচ্ছে, আর নতুন করে রোপন করা হচ্ছে বাড়ির ছোট টবে তিন ফুটের সখের বৃক্ষ।

হারিয়ে যাচ্ছে আম, জাম, কাঁঠাল, বেল, বট, পাকুড়, নিম সাল সেগুন। উক্ত গাছগুলির পরিবর্তে রাস্তার ধারে ও বিভিন্ন জায়গা জঙ্গলে স্থান পাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া, সোনাঝুরি, শিশু, ইউকালিপটাস ইত্যাদি, পক্ষীকুল গাছের ফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যার ফলে এক বড় ধরনের পক্ষী হারিয়ে যাচ্ছে। এক কথায় নিয়মিত ধরিত্রী মায়ের উপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার চলেছে। এর ফলে অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস পাচ্ছে। করোনার মতো বিভিন্ন মহামারি গ্রাস করছে মনুষ্যকূলকে। পাতাল কেটে নিয়মিত কৃষিকাজে মিঠা জলের অপচয়, যার ফলে পানীয় জলের সংকট এগিয়ে আসছে, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগে মাটিমা খুবই কষ্ট পাচ্ছে।

প্রতিবছর ২২ এপ্রিল পৃথিবীকে সুস্থ সুন্দর রাখার জন্য ‘ধরিত্রী দিবস’ নাম দিয়ে বড় বড় বাক্যবাণের দ্বারা দিনটি উদযাপিত হয়। অদ্ভুত ব্যাপার আমাদের পৃথিবীকে ভাল রাখার জন্য চিন্তা ভাবনা শুধু একদিন তথা ২২ এপ্রিল। মানুষ তথা সমস্ত জীবকুলের একমাত্র আশ্রয়স্থল ধরিত্রী মায়ের কোল। সুতরাং তাকে রক্ষা করার, ভাল রাখার দায়িত্ব মানুষের এবং তা প্রতিদিনের। ধরিত্রী দিবসে সকল মানুষের একটাই সংকল্প করা উচিত, আমরা ক্ষুদ্র স্বার্থকে ভুলে, বৃহত্তর স্বার্থরক্ষায় শামিল হব। তবেই ধরিত্রী মাতা সুরক্ষিত থাকবে এবং জীবজগৎ সুস্থ, সুন্দর থাকার সুযোগ পাবে।

Related Articles