
Truth Of Bengal: সঞ্জয় ব্যানার্জী: বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম বুদ্ধ পালি ভাষার মাধ্যমে তাঁর শিষ্যদের উপদেশ দিতেন। সেই সব অমৃতময় উপদেশগুলি বিভিন্ন শিলালিপিতে পাওয়া যায়। অতীশ-দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান সমগ্র পৃথিবীতে বৌদ্ধ ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের বাণী প্রচার করেন। বৌদ্ধ ধর্মের মূল নীতি হল শান্তি ও অহিংসা। সম্রাট অশোক একদা চণ্ডাশোক নামে পরিচিত ছিলেন। কেন না অশোক কলিঙ্গ যুদ্ধে রক্তবন্যা বইয়ে দিয়ে হিংসা এবং ক্রুরতার নির্দশন রেখেছিলেন। পরবর্তী সময়ে সেই চণ্ডাশোক ভগবান বুদ্ধের শরণাপন্ন হয়ে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করে তিনি ধর্মাশোকে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। কলিঙ্গ যুদ্ধের পর অশোকের মনে এক পরিবর্তন দেখা দিয়েছিল।
অশোক শুধুমাত্র বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেননি। তিনি সমগ্র ভারতবর্ষে বৌদ্ধধর্মের প্রচার করেছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন ভারতবর্ষ শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্বের দেশ। খ্রিস্ট্রিয় প্রথম শতাব্দীর অনেক আগে থেকেই দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ জুড়ে ভারতবর্ষের সভ্যতা ও সংস্কৃতির ধারার ব্যাপক প্রসারণ ঘটে। এমনকী সেই সময়ে ভারতবর্ষের বাইরের দেশগুলি মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ড ইত্যাদি অঞ্চলে হিন্দুধর্মের সব থেকে বড় অবদান বৌদ্ধধর্মের ব্যাপক প্রসার ঘটে। এককথায় আমরা বলতে পারি, বৌদ্ধধর্মের এমন ব্যাপ্তি হিন্দুধর্মের এক অভাবনীয় রূপান্তর।
বিভিন্ন শিলালিপি থেকে আমরা অর্থাৎ ভারতবর্ষের মানুষ বৌদ্ধধর্মের বিভিন্ন বিষয় জানতে পেরেছি। সংস্কৃত ভাষা ভারতবর্ষের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। সংস্কৃত ভাষা ছিল একসময় রাষ্ট্র ভাষা। ভারতবর্ষের সেই সময়ের মানুষজন সংস্কৃত ভাষার মাধ্যমে একে অপরের ভাব বিনিময় করতো। তাদের কথ্য ভাষা ছিল সংস্কৃত। এই সংস্কৃত ভাষা থেকেই অন্যান্য ভাষার উৎপত্তি। বৌদ্ধ ধর্ম পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ধর্ম। বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও পর্যটকদের বিবরণের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, বৌদ্ধ ধর্মের প্রসারের কথা। বিশেষ করে চিনের পর্যটকদের মধ্যে ফা-হিয়েন, হিউয়েন সাং তাঁদের লিখিত পুঁথি থেকে জানতে পারি ভারতবর্ষের সেই সময়ের পরিস্থিতির কথা। ভারতবর্ষ আজও একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বৌদ্ধধর্ম এবং বুদ্ধদেবের বাণীর ওপর নির্ভরশীল।