সম্পাদকীয়

বাঙালি মমতা বন্দোপাধ্যায়কে মনে রাখবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের জন্য

Bengalis will remember Mamata Banerjee for the Jagannath Temple in Digha

Truth Of Bengal: জয়ন্ত চক্রবর্তী: নিন্দুকেরা যতই তাঁকে ব্যঙ্গ করুন, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আমলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছে বাংলা। বাংলার মেয়েদের জন্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার হয়েছে। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজ সাথী সহ বহু উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে, কলকাতা লন্ডন না হোক এই শহরের রূপটানের কথা সর্বজনবিদিত। জেলা শহরগুলির ছিরি ফিরেছে। হাসপাতালগুলি যথার্থ সেবার আকর হয়েছে। হাসপাতালে ঢুকলে আজ আর গা ঘিনঘিন করে না। বিরোধীদের সমালোচনা যতই আছড়ে পড়ুক মমতা বন্দোপাধ্যায়ের গায়ে– একা একজন মহিলা এত কাজ করছেন তা বোধহয় কল্পনার অতীত।

২০১১ সাল থেকে তিনি এই রাজ্যে ক্ষমতায় আছেন। তাঁর এবং তাঁর দলের ওপর ঝড়ঝাপটা কম যায়নি। তবু তিনি অতন্দ্র হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছেন। চৌদ্দ বছর রাম বনবাসে ছিলেন। চোদ্দ বছর মমতা বন্দোপাধ্যায় ক্ষমতায় আছেন। বিজেপি যতই রামকে নিজেদের কুক্ষিগত করার চেষ্টা করুক, ভগবান শ্রী রামচন্দ্র সার্বজনীন। মমতা বন্দোপাধ্যায়ও সার্বজনীন। চোদ্দ বছরে কেউ তাঁর আসন টলাতে পারেনি।

এতদ্বারা কেউ ভেবে বসবেন না যে আমি ভগবান শ্রীরামচন্দ্রর সঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তুলনা করছি। ভগবানের সঙ্গে মানুষের তুলনা করব এমন মূর্খ আমি নই। তবে, মমতাকে বাঙালি মনে রাখবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের জন্য। মমতা যে ভাবে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের একটি রেপ্লিকা তৈরি করেছেন দিঘায়, যে আর কিছু না করলেও শুধু এই কাজটির জন্যে বাঙালি চিরকাল মমতা বন্দোপাধ্যায়কে মনে রাখবে।

কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছে যে আমাদের ট্যাক্স-এর টাকায় জগন্নাথ দেবের মন্দির নির্মাণ করে পুরো কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা? সবিনয়ে জানাই গোটা রাজ্য, এই ভারতবর্ষ, এই দুনিয়াটাই তো চলে ট্যাক্স-এর টাকায়। মমতা বান্দোপাধ্যায়ের আগে কেউ কি ভেবেছিলেন শ্রী ক্ষেত্রের এই মন্দির এই বাংলায় সংস্থাপিত করার কথা। হলফ করে বলতে পারি কেউ ভাবেননি। তাই, শুধু এই কাজটির জনেই মমতা বন্দোপাধ্যায়কে বাঙালি চিরকাল মনে রাখবে। ভাবতে পারেন দিঘার এই জগন্নাথ মন্দির কত ব্যবসা হতে পারে। কত মানুষের রুটি রুজির ব্যবস্থা হল। দিঘার পর্যটন মূল্য ছিলই এখন তা তীর্থক্ষেত্রে রূপান্তরিত হল।

জগন্নাথ দেব ভক্তের ত্রাতা। কত মানুষের ত্রাতা হলেন মুখ্যমন্ত্রী? দুর্নীতি নাকি তৃণমূলকে গ্রাস করেছে। তাই তারা নাকি জগন্নাথ দেবকে বৈতরণী করে বিপদসঙ্কুল দরিয়া পার করার চেষ্টা করছে। জানি এই রটনাও আছে। রটনা ঘটনা যাই হোক, বাঙালি মমতা বন্দোপাধ্যায়কে অক্ষয় অমর বলে ভাববে তাতে যে কোনও সন্দেহ নেই, তা বোধহয় বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না।

Related Articles