আন্তর্জাতিক

মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে যুদ্ধের তীব্রতা, ইজারায়েলি সেনার নিশানায় বেইরুট

Middle East is increasing the intensity of the war, Israeli army targets Beirut

Truth Of Bengal: মধ্যপ্রাচ্যে ভয়াবহ লড়াই চলছে। হিজবুল্লাহকে নিশানা করে লেবাননে অভিযান চালিয়েছে ইজরায়েল। এমনকি ঘনবসতি পূর্ণ এলাকাগুলিও বাদ যায়নি। গত ১৮ বছরে প্রথমবারের মতো মধ্য বেইরুটে বোমাবর্ষণ করেছে ইজরায়েলি বাহিনী। এই হামলায় অন্তত ৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে।

সোমবার মধ্যরাত থেকে লেবাননে ‘গ্রাউন্ড অপারেশন’ শুরু করেছে ইজরায়েলি সেনা। তাদের লক্ষ্য হল ইরান সমর্থিত শিয়া সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর গোপন ‘নেটওয়ার্ক’। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে মঙ্গলবার থেকে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া শুরু করেছে। ইজরায়েলের ভূখণ্ডে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ছে। এই হামলার পর ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফল ভোগ করতে হবে ইরানকে। এদিকে, আমেরিকাও ইরানকে সতর্ক করেছে।

তেল আভিভে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধের আশঙ্কার মধ্যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার জানিয়েছে, তারা ইজরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে।

ইরানের হামলার জবাবে ইজরায়েল বুধবার বলেছে, ‘তেহরানকে এর জন্য কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।’ ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সরকার জানিয়েছে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেইনি তাদের পরবর্তী লক্ষ্য। অন্যদিকে, হামলা হলে আরও ‘ধ্বংসাত্মক পাল্টা হামলার’ হুমকি দিয়েছে ইরান। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উভয় পক্ষকেই অস্ত্র সংবরণের আবেদন জানিয়েছেন। যদিও নেতানিয়াহু সরকার তা খারিজ করেছে।

সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্য সবসময়ই একটি বারুদের স্তূপের মতো ছিল। গত ৭ অক্টোবর, ইজরায়েলের উপর প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাসের হামলা একটি বিস্ফোরণ ঘটায়। এর প্রতিশোধ হিসেবে, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধ ঘোষণা করেন। প্রায় এক বছর ধরে তেল আভিভ গাজায় ‘ধ্বংসযজ্ঞ’ চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি, সংঘাত লেবাননেও ছড়িয়ে পড়েছে। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, হিজবুল্লাহ বারবার ইহুদি দেশটিতে হামলা চালিয়েছে, যার যুক্তি ছিল গাজায় হামাসকে সমর্থন জানানো। এছাড়াও, ইরানের সমর্থনপুষ্ট ইয়েমেনের হাউথিরা লোহিত সাগর অঞ্চলকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। তারা সম্প্রতি তেল আভিভের মার্কিন দূতাবাসের সামনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যাতে প্রাণহানি ঘটে। এবং এসবের পেছনে ইরান রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর, ইজরায়েলের সাথে তেহরান সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। এই যুদ্ধ যা গাজায় শুরু হয়েছিল, তা এখন লেবানন হয়ে ধীরে ধীরে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা জাগিয়েছে।

Related Articles