র্যাগিংয়ের শিকার জুনিয়ররা, বাধ্য করা হত মদ্যপানে, জুটত মার, হিমাচলের কলেজে চাঞ্চল্যকর ঘটনা
Juniors subjected to ragging, forced to drink, beaten, sensational incident at college in Himachal

Truth Of Bengal, Barsa Sahoo : সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। ভিডিয়োটি হিমাচল প্রদেশের। ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, হিমাচল প্রদেশের সোলানের কান্দাঘাটে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র একজন জুনিয়র ছাত্রকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে, চড় মারছে, বেল্ট দিয়ে পিটিয়েছে এবং লাঞ্ছিত করছে।
Himachal Pradesh की एक निजी university का ragging का video हो रहा है viral | Himachal News pic.twitter.com/Q8jRbM6KAE
— MukulDev Rakshpati | मुकुलदेव रक्षपति (@TheRakshpati) September 10, 2024
ভাইরাল হওয়া ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, জুনিয়র ছাত্রকে চেয়ারে বসতে বাধ্য করা হচ্ছে। ছাত্রটি সিনিয়রদের দ্বারা আবৃত হয়ে রয়েছে। এরপর সিনিয়ররা জুনিয়র ছাত্রকে অ্যালকোহল পান করতে বলেন। কিন্তু জুনিয়র তাতে অস্বীকার করায় সিনিয়ররা তাকে জোর করে। এরপর বেল্ট দিয়ে শারীরিকভাবে আক্রমণ করা হয় জুনিয়ারের ওপর।
হামলার বেশ কয়েকদিন আগে হয়রানি সুস্থ করা ওই জুনিয়র ছাত্র পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। জুলিয়াস পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়ে বলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বয়সের ছাত্ররা তাকে কয়েকদিন ধরে অত্যাচার করছিল। পরে এই অত্যাচার হিংসাত্মক হামলায় পরিণত হয়। জুনিয়রের অভিযোগ শুনে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেন।
ভাইরাল ভিডিয়ো
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি ডাকা হয়েছে। এরপর তদন্ত শেষ হলে একটি অফিসিয়াল সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হয়। র্যাগিং হলো এক ধরনের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন। সারা ভারতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ঘটনায় বহু ছাত্র প্রাণ হারায়। শত শত মায়ের কোল হয় শূন্য।
এই ধরনের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের র্যাগিং- এর বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে। UGC সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় কে র্যাগিং বিরোধী ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়। এছাড়াও ইউজিসি জানিয়েছে, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র্যাগিং পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিরোধের জন্য অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি ও স্কোয়াড গঠন করতে হবে।
প্রথম বর্ষের এমবিএ ছাত্রকে র্যাগিংয়ের অভিযোগে ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা ছাত্রদের নামগুলি হল করণ ডোগরা (১৯) জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুরের বাসিন্দা; হিমাচল প্রদেশের মান্ডি থেকে চিরাগ রানা (১৯); রাজ্যের হামিরপুর থেকে দিব্যাংশ (১৯)। তিন শিক্ষার্থীকেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এসপি সোলান গৌরব সিং বলেন, “ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) এর ধারা ১১৫ (২) (স্বেচ্ছায় আঘাত করা), ধারা ১২৭ (২) (ভুলভাবে আটকে রাখা) এবং এইচপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (র্যাগিং নিষিদ্ধ) আইন ২০০৯ -এর ধারা ৩-এর অধীনে একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে”।
র্যাগিং এর জন্য পর্যাপ্ত আইন ও শাস্তি
ভারতীয় আইন অনুসারে, র্যাগিং কোন একটি ফৌজদারি অপরাধ যার শাস্তি কারাদণ্ড এবং জরিমানা। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট র্যাগিং রুখতে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে। এই ধরনের আচরণের প্রতি জিরো টলারেন্সের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ এই ধরনের ঘটনা ঘটায় তাহলে তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত বা বহিষ্কার সহ গুরুতর শক্তির সম্মুখীন হতে হবে।
যদি কেউ র্যাগিং এর সাথে জড়িত হয় তাহলে সেক্ষেত্রে ইউজিসি প্রবিধানে প্রতিষ্ঠানগুলিকে পুলিশের কাছে প্রথম এফআইআর দায়ের করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে তদন্তের স্বার্থে পুলিশকে নির্যাতিতার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পরিচয় গোপন রাখতে হবে। প্রতিবছর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহু ছাত্র-ছাত্রী র্যাগিং এর শিকার হয়। শুধু তাই নয়, র্যাগিং এর ফলে বহু শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করে।