সুপ্রিম কোর্ট কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের রায় দেওয়ার পর ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে বাংলাদেশ
Bangladesh is slowly returning to the rhythm after the Supreme Court gave the verdict to reform the quota system

The Truth Of Bengal : রবিবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ওদেশের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির পথে আসছে। সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলনের যৌথ মঞ্চ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমর্থক নাহিদ ইসলাম আপাতত দৃষ্টিতে ঘোষণা করেছেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত রাখা হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুর রহমান আগে জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার দিন সরকার নতুন কোটা ব্যবস্থার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে। কিন্তু সোমবার ওদেশের সময়ে রাত ৯টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জনপ্রশাসন দফতর থেকে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আন্দোলন সমর্থক নাহিদ জানান, বিজ্ঞপ্তি খতিয়ে দেখার পরই আন্দোলন প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারি ছুটিও বাড়িয়েছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, “দু’এক দিনেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।” সরকার জানিয়েছে, সোমবার রাত থেকে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালু করা যাবে, মোবাইল ইন্টারনেটও চালু হবে শীঘ্র। মঙ্গলবার দিনও থাকছে কার্ফু।
বাংলাদেশের সম্প্রতি পরিস্থিতির বিষয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “ছাত্রদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে অপশক্তি দেশজুড়ে ভয়ানক নাশকতা চালিয়েছে। দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করাই ছিল এদের লক্ষ্য। বিএনপি এবং তাদের শরিক জামাতে ইসলামি পরিকল্পিত ভাবে এই সব করেছে। জ্বালাও পোড়াও আগেও করেছে তারা। ফের এক বার তার মহড়া দিল।” এ দিন ওদেশের প্রধানমন্ত্রীর দফতর গণভবনে রফতানিকারী ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি বৈঠক করেন প্রধান মন্ত্রীর সাথে। হাসিনা তাঁদেরকে বলেন, “এই অপশক্তি ভয়ঙ্কর হিংসা ছড়িয়েছে, বিপুল পরিমাণ সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দিয়েছে ও ভাঙচুর করেছে। অর্থনীতির গুরুতর ক্ষতি করেছে। আর কখনও তারা যাতে এই কাজ করতে না-পারে, এদের আমরা খুঁজে বার করে কঠোর হাতে দমন করব।”
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ আলি আরাফত বলেন, “সরকারের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বক্তব্যের কোনও ফারাক নেই। ২০১৮-য় ছাত্ররা রাস্তায় নেমে দাবি জানানোর পরে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ জারি করে কোটা উচ্ছেদ করেছিলেন। তার পরে যে নিয়োগ হয়েছে, তা তো কোটা মেনে হয়নি। হাই কোর্ট সরকারি নির্দেশ খারিজ করার পরে সরকার তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে কেন, কোটা সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করে বলেই তো! তা হলে ছাত্রদের কেন সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া?” আরাফতের মতে— আগুন-ভাঙচুরের ধরণ দেখলেই বোঝা যায় ভেবে চিন্তে পরিকল্পনা করে ওসব করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “কোটা সংস্কারের সঙ্গে সেতু মন্ত্রকের কী যোগ? দেশের অহঙ্কার পদ্মা সেতু নির্মাণের পরে দেখাশোনা করে এই মন্ত্রক। এই মন্ত্রকে আগুন দেওয়া হয়েছে, দফতরের ১১৯টি গাড়ি দফায় দফায় পোড়ানো হয়েছে। বিটিভি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট কেবল-এর গুরুতর ক্ষতি করা হয়েছে। অর্থনীতিকে থমকে দেওয়া হয়েছে। এখন বলছে, নেট বন্ধ কেন, সরকার জবাব দাও!”
এদিন বিএনপি ও জামাতের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে উস্কানি দেওয়ার জেরে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোটা আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম জানান, মধ্যরাতে তাঁর চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রায় ২৪ ঘণ্টা আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। জ্ঞান আসার পর তিনি দেখেন, তিনি পড়ে আছেন একটি সেতুর নীচে। তাঁর পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে নাহিদকে গ্রেফতার করার অভিযোগ পুলিশ অস্বীকার করেছে। এদিন আন্দোলনেরী নেতারা দাবি করেন, তাঁদের আরও চার জন সমর্থককে গুম করে দিয়েছে পুলিশ।