নির্জনে প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন! উইকেন্ডে বাঘমুণ্ডি থেকে ঘুরে আসুন
Baghmudi Tour Plan

The Truth of Bengal: হাতে কয়েকদিন সময় থাকলে পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডিতে (Baghmudi) ঘুরে আসতে পারেন। কলকাতা থেকে বাসে কিংবা ট্রেনে পুরুলিয়া (Purulia) গিয়ে সেখান থেকে বাঘমুণ্ডিতে পৌঁছতে পারেন। কলকাতা থেকে যদি ট্রেনে যান, তাহলে পুরুলিয়া স্টেশনে নেমে বাঘমুণ্ডি যেতে পারেন। সড়কপথেও বাঘমুণ্ডি যাওয়া যেতে পারে। কলকাতা থেকে বাসে পুরুলিয়া গিয়ে সেখান থেকে গাড়িভাড়া নিয়েও বাঘমুণ্ডিতে যেতে পারেন। বাঘমুণ্ডি কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যেই নয়, নানাভাবে খ্যাত। ছৌ-নাচের জন্যে বিখ্যাত এই এলাকা। বাঘমুণ্ডি থেকে ছৌ-নাচের উদ্ভব হয়েছে। এছাড়া ছৌ-নাচের মুখোশও বাঘমুণ্ডির আদি বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে তৈরি হয়। মুখোশগুলি তৈরি হয় চরিদা গ্রামে, ৪০টি সূত্রধর পরিবার এই মুখোশ তৈরির কাজের সঙ্গে যুক্ত।
কীভাবে বাঘমুণ্ডি নামকরণ করা হল, তা জানা যায় না। এই বিষয়ে নানান গল্প প্রচলিত রয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রচলিত যে গল্পটি তা হল, বাঘমুণ্ডি পাহাড়ের আকারের সঙ্গে বাঘের মাথার মিল আছে। সেই অনুযায়ী নামকরণ করা হয়েছে বাঘমুণ্ডি। এককালে জমিদারশাসিত ছিল বাঘমুণ্ডি। অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি এখানে জমিদারির পত্তন হয়। আর বাঘমুণ্ডিকে ঘিরে কথিত আছে পৌরানিক কাহিনিও। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস, রামচন্দ্র বনবাসে যাওয়ার আগে সীতাকে নিয়ে বাঘমুণ্ডিতে এসেছিলেন। সর্বশেষ জনগণণা অনুযায়ী, বাঘমুণ্ডির জনসংখ্যা ৪ হাজার ৩৫জন। এই জনসংখ্যার মধ্যে ৬৭ শতাংশই সাক্ষর।
বাঘমুণ্ডিতে গিয়ে আরও যা দেখার, তা হল মন্দির। অতিপ্রাচীন এই মন্দিরগুলি। একসময়ে মাওবাদীরা বাঘমুণ্ডিকে অশান্ত করে তুলেছিল। এখন এখানে মাও আতঙ্ক নেই। শহরে থাকতে থাকতে অথবা দৈনন্দিন জীবনের চাপ থেকে ছুটি পেতে চাইলে, বাঘমুণ্ডি হতে পারে আপনার গন্তব্য। প্রকৃতিপ্রেমিক সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় জায়গা ছিল বাঘমুণ্ডি। এখানে বসেই বিভূতভূষণ লিখেছিলেন বেশ কয়েকটি ছোটগল্প। যদি কান পেতে নির্জনে প্রকৃতির রহস্য উপলব্ধি করতে চান, তাহলে ঘুরে আসতে পারেন বাঘমুণ্ডিতে।