ভারত-পাক উত্তেজনায় রাজস্থানে লাল সতর্কতা, ড্রোন হামলার পর সম্পূর্ণ লকডাউন
Red alert in Rajasthan amid India-Pak tensions, complete lockdown after drone strike

Truth Of Bengal: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে রাজস্থানের সীমান্তবর্তী জেলা বারমের, শ্রী গঙ্গানগর ও যোধপুরে জেলা প্রশাসন লাল সতর্কতা জারি করেছে। জনসাধারণকে অবিলম্বে নিজ নিজ ঘরে ফিরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমস্ত বাজার বন্ধ রাখার ও জনচলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এই আদেশ কঠোরভাবে কার্যকর করতে পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জরুরি সতর্কতা জারি করার পেছনে বড় কারণ হল শুক্রবার ভোরে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের দিক থেকে ড্রোন হামলার চেষ্টা। ভোর ৫টার দিকে ভারতীয় সেনা বাহিনী হুমকিটি শনাক্ত করে সফলভাবে প্রতিরোধ করে এবং তা নিষ্ক্রিয় করে। এর পরই সকাল ৬টা পর্যন্ত ব্ল্যাকআউট কার্যকর হয়, যা প্রায় ১২ ঘন্টা স্থায়ী ছিল।
শ্রী গঙ্গানগর জেলায় ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ লকডাউন কার্যকর হয়েছে। নাগরিকদের ঘরের বাইরে না বেরোনোর জন্য জোরালোভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পুলিশ এলাকাজুড়ে টহল দিচ্ছে এবং মাইকে ঘোষণা করে নাগরিকদের সতর্ক করছে। যোধপুরেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে একই ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—সব দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে এবং কেউ রাস্তায় বেরোতে পারবে না।
জয়সলমীরেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের জনসাধারণকে অনুরোধ করতে এবং জনসমাগম এড়াতে দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার রাতেও পাকিস্তান থেকে ভারতের ২৬টি স্থানে ড্রোন হামলার চেষ্টা হয়েছিল। এর মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে গুজরাট পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হামলার টার্গেট ছিল বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে শত্রু পক্ষের এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-কে পাকিস্তানের ঋণ কর্মসূচির পর্যালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, সীমান্ত সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের অব্যাহত সহায়তা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, আইএমএফ তাদের ৭ বিলিয়ন ডলারের বেলআউট কর্মসূচির প্রথম পর্যালোচনা অনুমোদন করেছে, যার ফলে তারা ১ বিলিয়ন ডলারের কিস্তি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এখন পর্যন্ত এই কর্মসূচির অধীনে মোট ২ বিলিয়ন ডলার মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
তবে ভারত এই অনুদান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, কারণ পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগ বহুদিনের। আইএমএফের এই পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ। সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে সুরক্ষা জোরদার করা হয়েছে এবং কেন্দ্র থেকে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছে সাধারণ জনগণকেও।