রাজ্যের খবর

যাত্রা শিল্পকে বাঁচাতে মঞ্চে রাজনৈতিক নেতা

Political leaders on stage to save the travel industry

Truth Of Bengal: লোকেশ হালদার, মথুরাপুর: গ্রামবাংলার মাটি আর সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত যাত্রা শিল্প আজ অস্তিত্ব সংকটে। এক সময়ের জনপ্রিয় এই শিল্পমাধ্যম আজ সোশ্যাল মিডিয়া, টেলিভিশন, ওটিটি প্ল্যাটফর্মের দাপটে অনেকটাই কোণঠাসা। শহর তো বটেই, মফস্বলের মাঠেও হারিয়ে যেতে বসেছে মঞ্চনাটক ও যাত্রার আলাদা কদর। কিন্তু এমনই এক সময়ে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত মথুরাপুর এলাকায় যাত্রা শিল্পকে টিকিয়ে রাখার এক অনন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মথুরাপুর ১ নম্বর ব্লক সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মানবেন্দ্র হালদার।

এই লড়াই শুধুই প্রশাসনিক বা আর্থিক নয় — এটা এক সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতা, এক আত্মিক দায়। দিনের পর দিন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, প্রশাসনিক দায়িত্ব, মানুষের অভাব – অভিযোগ সামলে যখন অন্য কেউ বিশ্রাম নিতেন, তখন মানবেন্দ্র হালদার পৌঁছে যান যাত্রার মঞ্চে — কখনো দেবদাস, কখনো শিক্ষক, কখনো সমাজসেবী পুলিশ অফিসারের ভূমিকায়। এককথায়, অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখছেন।

এমন বহু মেলা, পূজা কিংবা উৎসবে দেখা যায়, যাত্রাপালায় মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন স্বয়ং মানবেন্দ্র হালদার নিজেই। কখনো বিনা পারিশ্রমিকে, কখনো স্বল্প খরচে — তবে মূল লক্ষ্য একটাই, যাত্রা শিল্পকে মানুষের সামনে ফিরিয়ে আনা। শুধু অভিনেতা নন, তিনি সংগঠকও। যাত্রা শিল্পের সঙ্গে জড়িত অসংখ্য মেকআপ আর্টিস্ট, আলোকসজ্জা কর্মী, সাউন্ড টেকনিশিয়ান, মিউজিসিয়ানদের জীবিকা যেন এই শিল্পের টিকে থাকার সঙ্গে যুক্ত। তাই তাঁর এই প্রয়াস শুধু শিল্প রক্ষার নয়, শত শত মানুষের জীবন রক্ষার লড়াইও বটে।

যাত্রা শিল্পের অস্থির বর্তমানেও মানবেন্দ্র হালদার মনে করেন—এই মাধ্যমই এখনও মানুষকে বিনোদনের পাশাপাশি সামাজিক বার্তা পৌঁছে দিতে পারে। তাই শহরের চটকদার আয়োজনের মাঝেও তিনি নির্ভর করেন মাটির টান, গানের সুর আর নাটকের আবেগে ভরপুর এই যাত্রাশিল্পের ওপর।

যাত্রার প্রতি তাঁর এই ভালোবাসা, দায়বদ্ধতা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবেই নয়, একজন সংস্কৃতিমনা সমাজকর্মী হিসেবেও তাঁকে অনন্য করে তোলে।

Related Articles