বাস্তবায়নের পথে ‘আমরুদ’ প্রকল্প, সোনারপুরে মিলবে বিশুদ্ধ জল
'Amrud' project on track for implementation, pure water will be available in Sonarpur

Truth Of Bengal: এক দশকের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে চলেছে রাজপুর সোনারপুর পুরসভা। বহু প্রতীক্ষিত ‘আমরুদ’ প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরের মধ্যেই রাজপুর সোনারপুর পুর এলাকার প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে যাবে গঙ্গার পরিশ্রুত জল। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ অবশেষে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
সম্প্রতি প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনায় এলাকায় পরিদর্শনে যান পুরপ্রধান পল্লব দাস, পুর পরিষদ সদস্য নজরুল আলি মণ্ডল, প্রকৌশলী ও অন্যান্য আধিকারিকরা। পুরপ্রধান আশ্বাস দিয়েছেন, দুর্গাপুজোর আগেই জল সরবরাহ শুরু হবে এবং প্রতিদিন মাথাপিছু ১৩৫ লিটার জল বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে।
গার্ডেনরিচের ভূতঘাটে গঙ্গার উপর নির্মিত ‘ইনটেক জেটি’ থেকে প্রতিদিন উত্তোলিত হবে ১৮৫ মিলিয়ন লিটার জল। এই জল প্রায় ১৮ কিমি দূরে, পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৈরি বিশাল ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে পরিশোধিত হবে। প্রায় ১০ বিঘা জমির উপর নির্মিত এই প্ল্যান্ট থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হবে প্রতিটি পরিবারে।
পরিকাঠামো মজবুত করতে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে ৪টি ওভারহেড জলাধার ও ১টি ভূগর্ভস্থ জলাধার। এছাড়াও আরও ১৯টি ওভারহেড এবং ২টি ভূগর্ভস্থ জলাধার নির্মাণাধীন। উত্তোলিত ১৮৫ মিলিয়ন লিটার জলের মধ্যে ১২৪ মিলিয়ন লিটার জল ব্যবহার করা হবে রাজপুর সোনারপুর অঞ্চলে। অবশিষ্ট জল সরবরাহ করা হবে কলকাতা ও বারুইপুর পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে।
পুর পরিষদ সদস্য নজরুল আলি মণ্ডল জানিয়েছেন, এই প্রকল্প চালু হলে ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে, যা পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে এক বড় পদক্ষেপ। নদীর জল ব্যবহারে যেমন ভূগর্ভস্থ জলের ওপর নির্ভরতা কমবে, তেমনই দীর্ঘমেয়াদে জলের চাহিদা মেটাতে এই প্রকল্প এক টেকসই সমাধান হবে।
প্রকল্পের প্রাথমিক বাজেট ছিল ৭৫১ কোটি টাকা, যা বাস্তবায়নের শেষে এসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০০ কোটি টাকায়। কেন্দ্র, রাজ্য ও পুরসভা — তিন পক্ষ মিলে এই ব্যয়ভার বহন করছে। চেতলায় পাইপলাইন পাতার পথে একটি প্রাচীন মন্দির পড়ায় কিছু বিলম্ব হলেও, তার গঠন অক্ষুণ্ণ রেখে কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
পুরপ্রধান পল্লব দাস বলেন, “এই প্রকল্প শুধু পানীয় জলের সংকট দূর করবে না, বরং একটি স্থায়ী, পরিবেশবান্ধব ও স্বচ্ছ জলের ব্যবস্থা গড়ে তুলবে সোনারপুরবাসীর জন্য।” জল সংকটের অবসানে এ যেন এক নতুন সূচনা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে রাজপুর সোনারপুরের হাজার হাজার পরিবার পাবে সুপেয়, নিরাপদ পানীয় জলের সুবিধা। আর এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ এলাকার সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়নের এক মাইলফলক হয়ে থাকবে।