দেশ

নাগরিকত্বের প্রমাণে চলবে না আধার, প্যান, রেশন কার্ড: বৈধ নথির তালিকা দিল সরকার

Aadhaar, PAN, ration cards will not be enough to prove citizenship: Govt

Truth of Bengal: ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণে নানা ধরণের পরিচয়পত্র থাকলেও, সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে—আধার কার্ড, প্যান কার্ড কিংবা রেশন কার্ড—এইসব নথি নাগরিকত্বের সরাসরি প্রমাণ নয়। যদিও এরা প্রশাসনিক ও কল্যাণমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়, তবে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য যথাযথ প্রমাণ হিসেবে কেবলমাত্র জন্ম সনদ ও ডোমিসাইল সার্টিফিকেট-কেই গ্রহণযোগ্য হিসেবে ধরা হয়।

কোন নথি কী কাজে ব্যবহৃত হয়?

আধার কার্ড মূলত একজন ব্যক্তির পরিচয় ও বসবাসের ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। UIDAI (ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া) আধারকে নাগরিকত্বের প্রমাণ বলে গণ্য করে না।

প্যান (পার্মানেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বর) কার্ড আয়কর সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত হয়, এবং রেশন কার্ড খাদ্যদ্রব্য বণ্টনের ক্ষেত্রে দরিদ্র পরিবারদের সহায়তার জন্য। এইসব নথির কোনোটি-ই আইনি দৃষ্টিতে নাগরিকত্ব প্রমাণ করে না।

নাগরিকত্ব প্রমাণে কী লাগবে?

সরকারি বিধান অনুযায়ী, কেবলমাত্র দুটি নথি ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ধরা হয়:

১. জন্ম সনদ:

১৯৬৯ সালের ‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন’ অনুযায়ী, যদি কেউ ভারতের ভেতরে জন্মগ্রহণ করে এবং তার জন্মের যথাযথ নথিভুক্ত সনদ থাকে, তবে সেটি নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয়। স্থানীয় পৌরসভা, পঞ্চায়েত বা সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে এটি সংগ্রহ করা যায়।

২. ডোমিসাইল সার্টিফিকেট:

এই সার্টিফিকেটে প্রমাণ থাকে যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্দিষ্ট রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। এটি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন বা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সংগ্রহ করা যায়।

বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই নাগরিকত্বের সঠিক প্রমাণের দাবি ওঠে—যেমন, সরকারি চাকরির আবেদন, পাসপোর্ট তৈরির সময়, নাগরিক তালিকা (NRC), বা আদালতে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত মামলায়।

যাদের কাছে জন্ম সনদ বা ডোমিসাইল নেই, তাদের এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। আধার, প্যান কিংবা রেশন কার্ড থাকলেও তা নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা দেয় না। ফলে, ভবিষ্যতে কোনো আইনি জটিলতা এড়াতে এই নথিগুলি সংগ্রহ করা এবং যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।

সচেতন নাগরিকদের করণীয়:

  • যদি জন্ম সনদ বা ডোমিসাইল সার্টিফিকেট না থাকে, তাহলে স্থানীয় পুরসভা/পঞ্চায়েত/জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত সংগ্রহ করুন।
  • পুরনো নথিগুলি যাচাই করে দেখুন, সেগুলিতে ভুল তথ্য থাকলে সংশোধন করুন।
  • সন্তানদের জন্মের পর তাৎক্ষণিকভাবে জন্মনিবন্ধন করান এবং সনদ সংগ্রহ করুন।
  • ভবিষ্যতের সরকারি সুবিধা গ্রহণের জন্য এই নথিগুলির ডিজিটাল কপি সংরক্ষণ করুন।

নাগরিকত্ব শুধুমাত্র পরিচয়ের বিষয় নয়, এটি একটি আইনগত স্বীকৃতি। তাই নাগরিক হিসেবে নিজের অধিকার বজায় রাখতে হলে এই মৌলিক প্রমাণপত্রগুলির হালনাগাদ রাখা ও যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা এখন সময়ের দাবি।

Related Articles