মহাকাশে বাড়ছে ই-আবর্জনা! বিপদের মুখে মানব সভ্যতা
E-garbage is on the rise in space! Human civilization in danger

Truth of Bengal: নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে মানুষ এগিয়ে চলেছে ভবিষ্যতের পথে। কিন্তু সেই পথে হাঁটতে গিয়ে কি নিজেদের নীল গ্রহকেই বিপদের মুখে ফেলছে মানব সভ্যতা? এমনই এক আশঙ্কার ছবি তুলে ধরছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা।
পৃথিবীর চারপাশে দ্রুত বাড়ছে ই-আবর্জনা। এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে বিপদের সম্ভাবনা। শুধুমাত্র ২০২৪ সালেই মহাকাশ থেকে প্রায় ১২০০টি বস্তু পৃথিবীতে খসে পড়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সামনে আরও বড়সড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
ই-আবর্জনা বলতে বোঝানো হচ্ছে মহাকাশে জমে থাকা অকেজো কৃত্রিম উপগ্রহ, রকেটের পরিত্যক্ত অংশ, মিশনের সময় ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ (যেমন লেন্স ক্যাপ, বোল্ট ইত্যাদি), এবং মহাকাশে সংঘর্ষের ফলে তৈরি হওয়া ধাতব টুকরো।
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে অন্তত ৪০ হাজারের বেশি বস্তু পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যদিও বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মাত্র ১ সেমির বেশি আকারের কোনো বস্তু যদি পৃথিবীতে পড়ে, তবে তা বিপদ ডেকে আনতে পারে। অনুমান করা হচ্ছে, বর্তমানে মহাকাশে ১২ লক্ষের বেশি বর্জ্য জমে রয়েছে।
ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিতকারী যন্ত্র MASTER-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় সক্রিয় কৃত্রিম উপগ্রহের আশেপাশেই ঘুরছে এসব ই-বর্জ্য। এর ফলে যেকোনো সময় বড়সড় সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ২০২৪ সালেই প্রায় ৩০০০ নতুন ই-বর্জ্য কক্ষপথে যুক্ত হয়েছে।
এই বর্জ্য শুধুমাত্র পৃথিবীতে পড়ে ক্ষতি করতে পারে না, মহাকাশযানের নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলছে। মহাকাশ অভিযানের ঝুঁকি যেমন বাড়ছে, তেমনি পৃথিবীর কক্ষপথও হয়ে উঠছে দূষিত। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো ধ্বংসাবশেষ অপসারণ প্রযুক্তি। তবে শেষ পর্যন্ত এই উদ্যোগ কতটা সফল হবে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।
মানুষ মহাকাশ জয় করতে চায়, কিন্তু সেই চেষ্টায় যেন পৃথিবী না হারে—এটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।