সম্পাদকীয়

চাকরি হারিয়ে অথৈ জলে শিক্ষকরা

Teachers in distress after losing their jobs

Truth Of Bengal: এক সঙ্গে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল। কী হবে স্কুলের পঠন-পাঠন? কীভাবে চলবে স্কুল? চাকরিহারা শিক্ষকরা যেমন ভেবে পাচ্ছেন না তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তেমনই বিভিন্ন স্কুল পড়েছে সঙ্কটে। যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা কঠিন কাজ। ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর মধ্যে কার চাকরি বৈধ উপায়ে পাওয়া, আর কার চাকরি অবৈধ উপায়ে পাওয়া— সেই উত্তর পাওয়া যায়নি তদন্তে।

ফলে ২০১৬ সালের গোটা এসএসসি প্যানেল বাতিল করে দেয় শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের দেওয়া রায়ে চাকরি যায় ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর। ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের মামলায় হাইকোর্টের রায় বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় সামনে আসতেই হাহাকার শুরু হয় চাকরিহারাদের। চাকরি হারিয়ে কার্যত পথে বসেছেন শিক্ষকরা।

এবার তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেই উত্তর জানা নেই কারও। চাকরি পাওয়ার পর অনেকে নতুন স্বপ্নের বীজ বুনেছিলেন। কেউ লোন নিয়ে বাড়ি কিনেছিলেন। এবার তাঁদের কী হবে? কিছু অযোগ্যর জন্য কেন বৈধ উপায়ে পাওয়া শিক্ষকদের চাকরি চলে যাবে? ইতিমধ্যে ক্যানিংয়ে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এক শিক্ষিকা। ওই শিক্ষিকা একাধিক জনের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন।

পাড়ার সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে আরও অনেকের কাছ থেকে তিনি বেশ কিছু টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেই টাকা তিনি শোধ করতে পারেননি। বৃহস্পতিবার যখন সুপ্রিম কোর্টের রায় সামনে আসে তখন পাওনাদাররা একে একে তাঁর বাড়িতে হাজির হয়ে টাকা দাবি করেন। সময় বেঁধে দিয়ে তাঁকে অনেকে অপমান করেন। মানসিক চাপ সামলাতে না পেরে ওই শিক্ষিকা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই শিক্ষিকাকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তিনি আপাতত সিসিইউতে ভর্তি। সবে এমন ঘটনা। এরপর জানি না আর কী ঘটনা অপেক্ষা করে আছে! কারণ চাকরি হারিয়ে যে মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা, তা মোকাবিলা করা অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। সেই চাপ থেকে ‘মুক্ত’ হতে এমন অঘটন যে বাড়বে না তা কে বলতে পারেন।

Related Articles