সুদের টাকা দিতে না পারায় ‘কিডনি বেচার চাপ’, পুলিশের জালে অশোকনগরের ‘সুদখোর’
Ashoknagar's 'usurer' in police net, 'pressured to sell kidneys' due to inability to pay interest

Truth Of Bengal: রিল লাইফের ঘটনাকেও হার মানাবে,রিয়েল লাইফের এই মর্মস্পর্শী কাহিনী। শেক্সপিয়ারের মার্চেন্ট অফ দ্য ভেনিসের কথা মনে আছে। প্রখ্যাত নাট্যকার শেক্সপিয়ার সেই নাটকে তুলে ধরেন, টাকা দিতে না পারায় শাইলক নামে সুদখোর,সময়সীমা পার হওয়ায় অ্যান্টিনিও-র শরীর থেকে ১পাউন্ড মাংস দাবি করে বসে। বিচারক অনুরোধ করলেও শাইলক অনমনীয় থাকেন। নৃশংসতম সেই টানটান ঘটনা প্রমাণ করে, মানবিকতার থেকেও সুদ নেওয়াটা তার কাছে বড় বিষয়।
বর্তমান সময়ে অশোকনগরের এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়,মানুষ কত নীচে নামতে পারে। জানা গেছে,অশোকনগরের এক ব্যক্তি শীতল ঘোষ নামে একজনের কাছ থেকে ৬০হাজার টাকা নেয়। ৬০হাজার টাকার সুদ দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। সুদ দিয়ে দিলেও আসলটা দিতে পারেননি। দেনায় ডুবে যাওয়ায় আর্থিকভাবে কার্যতঃ নিঃস্ব পয়ে পড়েন শীতল ঘোষ।এরমাঝে অভিযোগ,যিনি টাকা নেন,তাঁকে সুদখোর শীতল ঘোষ চাপ সৃষ্টি করে।কিডনি বিক্রি করে টাকা মেটানোর দাওয়াই দেওয়া হয়।সুদখোরের অমানবিক কাজে হতবাক তিনি।
সুদের টাকা শোধ করতে না পারায় কিডনি বিক্রি করে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়।চাপের মুখে যুবক রাজি হয় কিডনি বিক্রি করতে। সুদখোর তাঁকে জানায় তাঁর টাকা ফেরত দিতে হবে। সেই মতো কিডনি বিক্রির প্রস্তাব দেয়, বাধ্য হয়ে সেই অসহায় যুবক এবং তার স্ত্রী ঠিক করে কিডনি বিক্রি করে দেনা শোধ করবে, সেইমতো শীতল ঘোষ এক মহিলার সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। যুবকের স্ত্রী বাধ্য হয়ে কিডনি দিতে রাজি হয়। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কিডনি হস্তান্তর হয় তাঁর স্ত্রীর। পরবর্তীতে সুদখোর শীতল ঘোষ, ষাট হাজার টাকার পরিবর্তে দুই লক্ষ টাকার বেশি দাবি করে। সুদের টাকা এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকা তাকে দিয়ে দিলেও আসল নিয়ে পাহাড়প্রমাণ চাপ সৃষ্টি করে।
অসহায় যুবক অবশেষে অশোকনগর থানার দ্বারস্থ হয়। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সুদখোর শীতল ঘোষকে গ্রেফতার করে। অশোকনগর থানা এই চক্রের সঙ্গে আর কে কে যুক্ত আছে, তা জানার জন্য তদন্তে নেমেছে।