রাজ্যের খবর

কাঁসার কৌলীন্য রক্ষার লড়াই , ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে শিল্প গ্রাম

The Truth of Bengal: বাঁকুড়া শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে দ্বারকেশ্বর নদের তীরে কেঞ্জাকুড়া গ্রামে এক সময় সাড়েতিনশোর বেশী কাঁসার বাসন তৈরির কারখানা ছিল। সারাদিন ছেনি, হাতুড়ি, বৈদ্যুতিক যন্ত্র আর হাপরের শব্দে গমগম করত গোটা গ্রাম। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন   কয়েক হাজার মানুষ। বর্তমানে   সংখ্যাটা অনেকটাই কমে এসেছে। এখানকার তৈরি কাঁসার জিনিষপত্র রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে পাড়ি দিত ভিন রাজ্যেও। কিন্তু বর্তমানে কাঁচামালের অভাব ও উৎপাদিত দ্রব্যের চাহিদা ক্রমশ কমতে থাকায় ব্যবসা কার্যত ধুঁকছে। টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন কারিগররা।

বাড়ি থেকে হোটেল সর্বত্র কাগজের থালাবাসনের ব্যবহার বাড়ায় কদর কমেছে কাঁসারের থালা বাসনের।ঝকঝকে কাঁসার থালায় ভাত খাওয়ার একটা রাজকীয় আনন্দ রয়েছে। তবে কাঁসার থালা যতটা উজ্জ্বল ঠিক ততটাই কঠিন এই থালা বানানো। পূর্বপুরুষের আমল থেকে এই কাঁসার থালা বানিয়ে আসছেন কারিগররা। প্রথমে চুল্লিতে গলিয়ে নেওয়া হয় কাঁসা। তারপর অর্ধ গোলাকৃতি আকারের কাঁসার টুকরো গুলিকে হাতুড়ি দিয়ে ঠুকে কিংবা মেশিনে চাপ দিয়ে থালার আকার দেওয়া হয়।

এই কঠোর শ্রম আর দক্ষ হাতের কারিকুরির উপযুক্ত পারিশ্রমিক এখন মিলছে।আগে অবস্থা খারাপ ছিল।বলছেন শিল্পীরাই। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত কাঁসার দাম তুলনামূলক ভাবে কম ছিল। তখন রমরমা ছিল কাঁসার বাজারের। তারপর লক্ষণীয় মূল্য বৃদ্ধি হয় কাঁসার দামের। ধীরে ধীরে কাঁসার বাসন থেকে দূরে সরতে থাকে মানুষ। অন্নপ্রাশন এবং অনুষ্ঠানে উপহার দেওয়া ছাড়া কাঁসার বাসনের চাহিদা কমেছে।তবু কেঞ্জাকুরার শ্রমিকরা সুদিন ফেরার আশায় কাঁসার বাসনের রাজকীয় ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্ট করছেন।

Related Articles