
The Truth of Bengal: টারজান নামটা শুনলেই ৮০ দশকে মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউড সিনেমা ‘অ্যাডভেঞ্চারস অফ টারজান ‘ – এর কথা মনে পড়ে। ছবিতে টারজানের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন হেমন্ত বিরজে। সেই অভিনেতাকে আজও দর্শকরা মনে রেখেছেন। সুন্দর করে দেখা মিলল বাস্তবের টারজানের। এখন রীতিমতো ভাইরাল সে। ছোটবেলা থেকেই সুন্দরবনের গভীর অরণ্যে প্রতিনিয়ত যাতায়াত সেই জঙ্গলের পশু পাখিদের ডাক কানে যেন সবসময় ভেসেই থাকতো। আজ সে হয়ে উঠল সুন্দরবনের ছোট্ট টারজান। তাঁর গলায় যেন যাদু রয়েছে। কখনও তাঁর কন্ঠে শোনা যায় কোকিল, ময়ূর, ব্যাঙ, বা হাঁসের ডাক। আবার কখনো শিয়াল কিংবা কুকুরের ডাক অনুকরণ করতে পারে। আর এমনই আওয়াজ করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন সুন্দরবনে পশু পাখিদের নিত্যদিনের সঙ্গী নবারুন।
কখনো খাবার দেয়ার জন্য ডাক আবার কখনো সঙ্গী হওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে কণ্ঠস্বরে মেতে উঠেন ছোট্ট নবারুন। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বসিরহাটের সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের পশ্চিম খেজুরবেড়িয়ার ১২ বছরের নবারুন মাহাতো। সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র পশ্চিম খেজুরবেড়িয়া হাই স্কুলে পড়াশোনা করে। ১৫-২০ টি প্রজাতির পশু, পাখির আওয়াজ করে রীতিমতো ভাইরাল এই কিশোর। বাড়িতেই বিভিন্ন আওয়াজ করতে করতে এভাবেই প্রতিভার বিকাশ হয়েছে। প্রথম অবস্থায় পরিবার ও প্রতিবেশীরা এমন আওয়াজ করার জন্য তাকে বকাবকি করলেও এখন তাকে সবাই বাহবা জানায়।
বিভিন্ন পাখির আওয়াজে সকলকে মাতিয়ে রাখে ছোট্ট নবারুন। বাবা রামপ্রসাদ মাহাতো, পেশায় মৎস্যজীবী জঙ্গলে মাছ ধরার পাশাপাশি আবার জমিতে চাষের কাজ করতেন। মা নমিতা মাহাতো বাড়িতে সংসারের কাজ দেখাশোনা করেন। সেই সুবাদে বাবার নিত্য দিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছিল নবারুণ। এলাকার বাসিন্দারা তার কাছে প্রায়ই বিভিন্ন পশু, পাখির ডাক শোনার জন্য বাড়িতে এসে ভীড় জমায়। দরিদ্র পরিবারের ছেলে নবারুন। পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থা পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি গ্রামবাসীদের। অদম্য জেদ ও শেখার ইচ্ছা দিয়ে বাস্তব জীবনে যে টারজান হয়ে ওঠা যায় তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল সুন্দরবনের ছোট্ট নবারুণ।