ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর আশা, রথ তৈরি করে চলেছে কিশোর শুভম
Kishore Shubham is making the Asha Rath to turn the wheel of fortune

The Truth of Bengal, দেবাশিস গুছাইত,হাওড়া: একদিকে চলছে পড়াশোনা। অন্যদিকে চলছে রথ তৈরি। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বাবার কাছে রথ তৈরি শিখে একমাস আগে থেকে কাজে নেমে পড়ে হাওড়ার আন্দুলের কিশোর শুভম চৌধুরি। রথের চাকা ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরবে তার ভাগ্যের চাকা। এই আশায় এক মনে কাজ করে চলেছে শুভম। আগামী রবিবার টান পড়বে রথের রশিতে। সর্বত্র এখন সাজো সাজো রব। কাঠমিস্ত্রিদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। তৈরি হচ্ছে ছোট ছোট রথ। কচিকাঁচাদের কাছে এই রথের গুরুত্বই আলাদা। তেমনই ছোট রথ তৈরিতে ব্যস্ত এক কিশোর। নড়বড়ে অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজের শৈশব ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। সেই শৈশব ভুলে কিছুটা আয়ের আশায় পড়াশোনার পাশাপাশি হাওড়ার আন্দুলের দক্ষিণ চাঁদনি বাগান এলাকার বাসিন্দা কিশোর শুভম এক মনে তৈরি করে চলেছে রথ।
রথযাত্রার এক মাস আগে থেকে ছোট ছোট হাতে সে লেগে পড়ে সে কাঠের রথ তৈরিতে। রথ বিক্রি করে পরিবারের পাশে আর্থিকভাবে দাঁড়াতে নবম শ্রেণির ছাত্র শুভমের এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে। ছোটবেলা থেকে বাবার কাছ থেকে শিখেছিল রথ তৈরি করা। এখন সে নিজেই রথ বানাতে পারে। একমাস আগে থেকে রথ কাজ শুরু হয়। যা আয় হয় তার বেশিরভাগটা সংসার চালানোর জন্য ব্যয় করে সে। প্রতি বছর ২০টি করে রথ তৈরি করলেও, এই বছর কয়েকটা বেশি বানাচ্ছে বাড়তি কিছু লাভের আশায়। রথ যদি বিক্রি না হয় তা হলে মন খুব খারাপ হয়ে যায় শুভমের। কোনও বছর বিক্রি না হলে তার পরের বছরের অপেক্ষায় থাকতে হয়।
এবার তার তৈরি সব রথ বিক্রি হয়ে যাবে– এই আশায় এক মনে রথ তৈরিতে ব্যস্ত স্কুল পড়ুয়া শুভম। ছেলের এই সংগ্রামে পাশে দাঁড়িয়েছেন বাবা বাপন চৌধুরি। তিনি জানান, তাঁর কাছে কাজ শিখে ছেলে এখন নিজেই রথ বানায়। পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে সে এই কাজ করে। রথের দড়িতে টান দিলে পাপ ক্ষয় হয় বলে বিশ্বাস। যদিও রথ বানিয়ে নিজের ভাগ্যের চাকা কবে ঘুরবে তা জানে না ছোট্ট শুভম। ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর আশায় শুভম রথ তৈরি করে চলেছে। পুরীর রথের মতো এই বাংলাতেও রথযাত্রার দিনে রথ টানা হয় অনেক জায়গায়। তার মধ্যে হাওড়ার আন্দুল জমিদার বাড়ির রথ বিখ্যাত। সেই আন্দুলে ছোট কাঠের রথ তৈরি করে চলেছে কিশোর শুভম।