
Truth Of Bengal: ওরা, কাজ করে। ওরা দিন-রাত এক করে নিজেকে ক্লাবের সেবায় নিয়োজিত করেন। মাঠের সবুজ ঘাস যেন ওদের হাতের নরম স্পর্শে লালিত-পালিত হয়ে ওঠে। ওরাই মাঠের অভিভাবক। ওরাই সব। ওরা মানে মালিরা। কলকাতা ময়দানের অধিকাংশ ক্লাবেই মাঠের দায়িত্ব নিরলসভাবে দিন-রাত এক করে পালন করে চলেন এইসব মালিরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম মোহনবাগানের ভাসিয়া মালি।
ভাসিয়া-র নামটা সবুজ-মেরুন রংয়ের সঙ্গে যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কত স্মৃতি, কত ঘটনা। মোহনবাগানের সবুজ মাঠ, মোহনবাগানের তাঁবু কিংবা ঐতিহ্যবাহী ক্লাব লন সবেতেই যেন ছড়িয়ে আছে ভাসিয়ার স্মৃতি। ক্লাব অন্ত প্রাণ সেই ভাসিয়া মালির নামেই এবার মোহনবাগান ক্লাবের নতুন ভবন উন্মোচিত হল বুধবার। ময়দানে এমন নজির এই প্রথম গড়ল মোহনবাগান ক্লাব।

ফুটবলাররা মাঠে লড়াই করেন, আর মালিরা মাঠের বাইরে নিজেদের রক্ত, শ্রম, ভালবাসা দিয়ে ক্লাবকে রক্ষা করেন। সেই ভাসিয়া-ও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। আজীবন সবুজ-মেরুন ক্লাব তাঁবুই ছিল তাঁর সবকিছু। ক্লাবের সুখ-দুঃখের সঙ্গে আমৃত্যু জড়িয়ে ছিলেন তিনি। তাঁর নামাঙ্কিত ভবন উন্মোচনের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে সেই স্মৃতিই যেন আবার একবার উসকে দিলেন ক্লাবের প্রাক্তন তিন ফুটবলার প্রদীপ চৌধুরি, মানস ভট্টাচার্য এবং সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ভাসিয়া মালির নামাঙ্কিত নতুন এই ভবনের উন্মোচন করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা।
ভাসিয়া ওদের কাছে শুধু মালি নয়, ভাসিয়া ওদের কাছে যেন অনেক কিছু। কিভাবে খেলোয়াড়দের বুক আগলে রক্ষা করতেন, অনুশীলন শেষে খেলোয়াড়রা কি খাবেন, তার ব্যবস্থা করা, ক্লাব জয় পেলে আনন্দে আত্মহারা হওয়া, আবার ক্লাব হেরে গেলে চোখের জলে দু-চোখ ভেজানো ভাসিয়া ছিলেন এমনই। কাজেই খুব কাছ থেকে দেখা ভাসিয়া ছিলেন তাঁদের কাছে এমনই একজন।
বুধবার এমন সুন্দর এক অনুষ্ঠানে মোহনবাগান ক্লাবে উপস্থিত ছিলেন ক্লাব কর্তাদের পাশাপাশি বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও। ক্লাবের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান উপস্থিত সকলেই। এবং একই সঙ্গে অনুষ্ঠানের এই মঞ্চ থেকেই সংবর্ধনা জানানো হয়, বিজয় নায়েক, শঙ্কর মণ্ডল এবং উমাকান্ত দাসদের।