লাইফস্টাইল

ঘি কফি খেয়েছেন, জানেন কী হবে খেলে?

You have eaten ghee coffee, do you know what will happen?

The Truth Of Bengal, Mou Basu: যদি খাদ্যরসিক কাউকে এখনকার ফ্যাশনেবল খাওয়ার ট্রেন্ড জিজ্ঞেস করেন তা’হলে অনেকেই ‘ঘি কফি’-র কথা। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন অনেক সেলেবই এখন গা ভাসিয়েছেন ‘ঘি কফি’ খাওয়ার ট্রেন্ডে। সম্প্রতি বলিউড অভিনেত্রী ভূমি পেডনেকর তো নিজেই ঘি কফি খাওয়ার ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন। ভূমি ছাড়াও কৃতি শ্যানন, জাহ্নবী কাপুর, মালাইকা আরোরা, শিল্পা শেট্টির মতো বলিউড সেলেবরাও দিনের শুরু এক চামচ ঘি দেওয়া কফি খেয়ে করেন। নামটা অদ্ভুত হলেও ঘি দেওয়া কিন্তু দারুণ স্বাস্থ্যকর। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক কাপ ঘি কফি প্রয়োজনীয় এনার্জি জোগায়। ধৈর্য্য ও একাগ্রতা বাড়িয়ে তোলে। ঘিয়ের সঙ্গে কফি মেশার ফলে সেরোটোনিন ও ডোপামিন হরমোনের নিঃসারণ বাড়ে যা মুড ভালো রাখে। সারাদিন মন চনমনে থাকে।

কেন ঘি কফিকে বলা হচ্ছে স্বাস্থ্যকর পানীয়?
১০০ গ্রাম ঘিতে দৈনিক প্রয়োজনের ৬১% ভিটামিন এ পাওয়া যায়। ১৪% ভিটামিন ই ও ১১% ভিটামিন কে মেলে। ঘি খেলে এসব ভিটামিন সহজে শরীরে মিশে যায়। শরীরে পুষ্টির জোগান দেয় ঘিতে থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট।

ঘি কফির ৭ পুষ্টিগুণ—
১) কফিতে দুধ দিলে দুধের মধ্যে থাকা শর্করা ও ল্যাকটোজ ও ক্যাসিন নামক প্রোটিন মিশে যায় কফিতে। তাই যারা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স ভোগে তাদের পক্ষে দুধ দেওয়া কফি হজম করতে অসুবিধা হয়। ডায়েরিয়া, গ্যাস ও পেট ফাঁপার মতো সমস্যায় পড়ে তারা। কিন্তু দুধের জায়গায় কফিতে ঘি দিলে এই সমস্যা হয় না। কারণ, ঘি তৈরির সময় দুধের সব মিল্ক সলিডস, প্রোটিন ও শর্করার ভাগ বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।
২) কফি তৈরির সময় কফির দানা থেকে অ্যাসিড বেরোয়। কফির অ্যাসিডিক পিএইচ মাত্রা থাকে ৪.৮৫-৫.১০- এর মধ্যে। তাই কফি খেলে অনেকেরই অ্যাসিড হয়। তাই খালি পেটে কফি খেতে নিষেধ করা হয় হজমের সমস্যা থাকলে। কিন্তু ঘি কফিতে এই সমস্যা হয় না কারণ ঘিতে ক্যালসিয়াম আছে যা অ্যাসিডকে নিউট্রালাইজ করে দেয়। পেটের গন্ডগোল হয় না।
৩) ঘি কফির অ্যাসিড ভাব দূর করে। এছাড়াও ঘিতে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বিউটিরেট নামক পদার্থ আছে যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ঘিতে মেলে গুড ফ্যাট বিউটিরিক অ্যাসিড আর ওমেগা-৩ যা বিপাকক্রিয়া বাড়িয়ে তোলে ও অন্ত্রকে ভালো রাখে। তাই সকালে খালি পেটে এক কাপ ঘি কফি খেলে পেটের যন্ত্রণা হয় না।
৪) ওমেগা থ্রি, সিক্স আর নাইন ফ্যাটি অ্যাসিড মেটাবলিজম বাড়ায়, হার্ট ভালো রাখে, হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। জয়েন্টের ব্যথা নিরাময় করে। ঘিতে ফ্যাটি অ্যাসিড আছে বলে ঘি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ঘি দেওয়া খাবার খেলে ব্যাড কোলেস্টেরল কমে।
৫) ঘি হজম হতে সময় লাগে। ঘি খেলে খাইখাই ভাব কমে। পেট ভরা থাকে। লেপটিন হরমোনের নিঃসারণ হয় যাতে মস্তিষ্কে সংকেত যায় যে পেটভরা আছে, হাবিজাবি ভাজাভুজি খাবার খাওয়ার প্রয়োজন নেই। কফিও হজম করতে দেরি হয়। তাই কফিও খাইখাই ভাব কমায়।
৬) ঘিতে মেলে খাঁটি বাটার ফ্যাট, ভিটামিন এ, ডি, কে। ওমেগা-৩, ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। ঘিতে জল, শর্করা আর প্রোটিন থাকে না। ঘি কফি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। কিটো ডায়েট করা ব্যক্তিদের জন্য দারুণ উপকারী ঘি কফি।
৭) ঘিয়ের ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে। স্নায়ুকে টানটান রাখে। হরমোনের নিঃসারণ বাড়িয়ে তোলে।

কীভাবে বানাবেন ঘি কফি?
একটা পাত্রে জল নিয়ে আগুনের ওপর বসান। জল গরম হয়ে ফুটতে শুরু করলে তাতে কফির গুঁড়ো দিন। ফোটানোর সময় এক চামচ ঘি দিন। কিছুক্ষণ ফোটানোর পর আগুনের আঁচ থেকে কফির পাত্র নামিয়ে নিন। একটা কাপে ছেঁকে নিয়ে গরম গরম খান ঘি কফি।

Related Articles