কলকাতারাজ্যের খবর

ব্যাহত হাসপাতালের পরিষেবা, সচল রাখতে তৎপর প্রশাসন

The administration wants to keep the services of the interrupted hospital running

Truth of Bengal: আরজিকরে চিকিৎসককে নির্যাতনও খুনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকদের আন্দোলন তীব্রতর হয়েছে। যারজন্য হাসাপাতালে ব্যাহত হয় পরিষেবা। কোথাও রোগীদের ফিরে যেতে হয়,কোথাও আবার রোগীর টিকিট কেটেও চিকিৎসা করাতে পারেননি। কিছু কিছু হাসপাতালের আন্দোলনরত চিকিৎসকরা আবার রোগীদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে কর্মবিরতিতে লাগাম টানেন। আন্দোলনকারীদের একাংশ এক ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করে।এরপর স্বাভাবিক হয় পরিষেবা।

একজন  তরুণী চিকিৎসককে খুন, ধর্ষণের মতো নৃশংসতম ঘটনার নিন্দায় মুখর চিকিৎসক সমাজ। আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে কলকাতা থেকে জেলায়। চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে জানা গেছে, রাজ্য জুড়ে কর্মবিরতি পালনের ডাক দিয়েছে ২১টি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এরমাঝে আরজিকর হাসপাতালের নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হয়েছেন সুহৃতা পাল। তিনি একটি বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করেন আরজি করের জন্য। বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য হচ্ছেন পুলিশ থেকে পূর্ত বিভাগ এবং হাসপাতালের প্রতিনিধিরাও।

এর মধ্যে পুলিশের যিনি প্রতিনিধি থাকবেন, তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন হাসপাতালের কোন কোন জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানো জরুরি, সে বিষয়ে। ওই বাহিনী গঠনের পরেই ওই মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে স্বাস্থ্য ভবন। স্বাস্থ্য কর্তাদের মতোই অধ্যক্ষও আন্দোলন প্রত্যাহারের আবেদন করেন। কিন্তু তাতে সুর নরম করেননি আন্দোলনকারীরা। তাতে পরিষেবা ব্যাহত হয়। একইভাবে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসাপাতালে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে যাতে সন্দীপ ঘোষ দায়িত্ব না পারেন সেজন্য বিক্ষোভ দানা বাঁধে।

ফলে অন্যান্য হাসপাতালের মতোই মেডিক্যাল কলেজেও কিছুটা পরিষেবা প্রদানের কাজ বাধা পায়। শহরের হাসপাতালগুলিতে টিকিট কেটে অনেক জায়গায় পরিষেবা মেলেনি বলে অভিযোগ ওঠে। রোগীদের চিকিৎসা না করিয়েই ফিরে যেতে হয়। কলকাতার সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল তো রয়েইছে, পাশাপাশি জেলায় জেলায় মেডিক্যাল কলেজ এবং সরকারি হাসপাতালগুলিতেও কর্মবিরতি পালন করেন চিকিৎসকেরা। যার প্রভাব পড়ে চিকিৎসা পরিষেবায়। বহির্বিভাগের চিকিৎসা  না মেলার কথা জানিয়েছেন রোগীও রোগীর পরিজনরা।

এর মধ্যে কিছু হাসপাতালে মঙ্গলবার সকালে স্বাভাবিক পরিষেবা শুরু হলেও জুনিয়র ডাক্তারদের চাপে তা মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাসপাতালে পৌঁছে আতান্তরে পড়েন রোগী এবং তাঁদের পরিবার। তবে কিছু কিছু হাসপাতালে রোগীদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে কর্মবিরতিতে রাশ টানা হয়েছে। এক ঘণ্টার প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করার পরে আবার স্বাভাবিক হয়েছে পরিষেবা। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন ডাক্তারির পড়ুয়ারা।

বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নার্স এবং চিকিৎসকরা কর্মবিরতি না করলেও প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল করেন। ‘চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর প্রভাব পড়ে। জুনিয়র চিকিৎসক সহ হাউস সার্জেন্ট,পিজিটি পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখান। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও এক ছবি দেখা যায়। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে আউটডোরেও রোগীদের বিরাট লাইন দেখা যায়।

রাজ্যের জেলা হাসপাতালগুলোতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে  থাকতে হয় রোগীদের। রোগীদের স্বার্থে আন্দোলন জারি রেখেও পরিষেবা জারি রাখার জন্য প্রশাসন আবেদন করেছে।স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমও একই আবেদন করেছেন।তাই পরিষেবা যাতে ব্যাহত না হয়,সেকথা মাথায় রেখে প্রশাসনের সঙ্গে চিকিত্সকসমাজ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় কিনা তার দিকে তাকিয়ে রোগীও রোগীর পরিজনরাও।

Related Articles