দেশ

প্রকৃতির সৌন্দর্যের ভান্ডার, অপরূপা সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান 

Similipal Tiger Reserve

The Truth of Bengal: যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। ঘন জঙ্গল। সেই সবুজের মাঝেই মাথা উঁচু করে ইতিউতি মাথা তুলেছে পাহাড়। ঝর্নার কুলু কুলু আওয়াজ, পাখীর কলরব। জঙ্গল, পাহাড়, ঝর্নায় ঘেরা ভারতের সপ্তম বৃহত্তম জাতীয় উদ্যান হলো ওড়িশার সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান। দমবন্ধ করা কংক্রিটের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ফুস ফুসে অক্সিজেন ভরতে যেতেই পারেন প্রকৃতী সুন্দরি সিমলিপাল জাতীয় উদ্যানে। ওড়িশার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান। ভারতের সপ্তম বৃহত্তম জাতীয় উদ্যান এটি। ওড়িশার বারিপদায় অবস্থিত এই সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান। এই উদ্যানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল এখানে লাল রেশমেরে গাছ পাওয়া যায়। সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান নামটি এই অঞ্চলে লাল রেশম তুলা গাছের প্রাচুর্য থেকে এসেছে বলে জানাগিয়েছে। সিমলিপাল হল ওড়িশা রাজ্যের ময়ূরভঞ্জ জেলার একটি বাঘ সংরক্ষণাগার, যা ২ হাজার ৭৫০ কিমি জুড়ে রয়েছে।

এটি ময়ূরভঞ্জ এলিফ্যান্ট রিজার্ভের অংশ, যার মধ্যে তিনটি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে সেগুলি হলো সিমিলিপাল টাইগার রিজার্ভ, হাদগড় বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এই জাতীয় উদ্যানে রয়্যাল বেঙ্গল থেকে শুরু করে হাতি, হরিণ, বানর এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে পাওয়া যায়। এই জাতীয় উদ্যানের মধ্যে রয়েছে একাধিক জলপ্রপাতও। সবুজ চাদরে ঢাকা পাহাডের গা বেয়ে নেমে আসার ঝর্নার মনরম দৃশ্য প্রকৃতি প্রেমিদের মুদ্ধ করে তোলে। পাহাড়ের সাথে জলপ্রপাতের দৃশ্য অন্বেষণ করতে এবং তা ক্যামেরা বন্দি করতে ছোট্ট ট্রেকও করতে পারেন এই অঞ্চলে। সিমলিপাল হাতি সংরক্ষণের উদ্ভব হয়েছিল মূলত রাজকীয়দের শিকারের জায়গা হিসেবে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫৬ সালে একটি বাঘ সংরক্ষণাগার হিসেবে মনোনীত হয় এবং ১৯৭৩ সালের মে মাসে ব্যাঘ্র প্রকল্প অধীন হয়।

ওড়িশা সরকার ১৯৭৯ সালে ২ হাজার ২০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সাথে সিমলিপালকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। পরে ১৯৮০ সালে রাজ্য সরকার একটি জাতীয় উদ্যান হিসাবে অভয়ারণ্যের জন্য ৩০৩ বর্গকিলোমিটার প্রস্তাব করেছিল। ১৯৮৬ সালে জাতীয় উদ্যানের আয়তন ৮৪৫.৭০ বর্গকিলোমিটার বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ভারত সরকার ১৯৯৪ সালে সিমলিপালকে বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ হিসাবে ঘোষণা করে। ইউনেস্কো ২০০৯ সালে এই জাতীয় উদ্যানটিকে তার জীবমণ্ডল সংরক্ষণের তালিকায় যুক্ত করে। জঙ্গলের মধ্যে ৬১টি গ্রামে ১০ হাজার মানুষ বাস করে। এই কারণেই ভারতের ১৮টি জীবমণ্ডলের একটির মর্যাদা থাকা সত্ত্বেও সিমলিপালকে এখনও একটি পূর্ণাঙ্গ পার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি।

Related Articles