লাইফস্টাইলস্বাস্থ্য

বাড়তি ওজন ঝরিয়ে স্থুলতা কমায় পটল

Pointed gourd helps in reducing excess weight

The Truth of Bengal, Mou Basu: সুস্থ জীবনের জিয়নকাঠি হল পটল। ডায়াবেটিস আর স্থুলতার মতো লাইফস্টাইল রোগ প্রতিরোধ করে পটল।  আবার তুচ্ছ, ফেলনা ভেবে ফেলে দেবেন না পটলের দানাও। কারণ, রক্তের শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে পটলের ছোট্ট দানা। আর্য়ূবেদে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিরাময় করতে ও সেক্স লাইফ ভালো রাখতে ব্যবহার করা হয় পটল।

পটলের বৈজ্ঞানিক নাম ‘Trichosanthes dioica’। লতানে গাছ পটলের অন্য নাম হল-পারওয়াল, পারভাল, পয়েন্টেড গোর্ড, ওয়াইল্ড স্নেক গোর্ড, গ্রিন পটেটো। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ পটল ভিটামিন এ, বি১, বি২, আর ভিটামিন সিতে ঠাসা। কম ক্যালরি থাকায় কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে পটল।১০০ গ্রাম পটলে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাসের মতো বিভিন্ন খনিজ পদার্থ। ওয়েস্টইন্ডিজে পটল, আলু আর দই দিয়ে বিশেষ পদ রান্না করা হয়। নেপালে পটলের স্যুপ পথ্য হিসাবে রোগীদের খাওয়ানো হয়। ইন্দোনেশিয়ায় নারকেলের দুধের সঙ্গে পটল রান্না করা হয়।

রক্ত পরিশুদ্ধ করে পটল। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আর ত্বককে ভালো রাখে।সিজন চেঞ্জের সময় অনেকেরই ঠান্ডা লাগে। আর্য়ূবেদে পটলকে ফ্লু সারানোর ওষুধ হিসাবে দেখা হয়। ঠান্ডা লেগে জ্বর হওয়া, কাশি কমাতে সাহায্য করে পটল। নিয়মিত পটল খেলে কমে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ধাত।

প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় হজমশক্তি বাড়ায়, খাবার হজম করতে সাহায্য করে পটল। অন্ত্র আর লিভারপর সমস্যা প্রতিরোধ করে পটল।

বয়স বাড়লে মুখে রিঙ্কলস বা বলিরেখা আর ফাইনলাইন্স দেখা দেয়। এখন দূষণের কারণে বয়স বাড়ার আগেই মুখে বয়সের ছাপ পড়ে যাচ্ছে। পটলে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর ভিটামিন এ ও সি থাকায়, বলিরেখা দূরে রাখতে প্রত্যেকদিন ডায়েটে রাখুন পটল।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে পটল। আধুনিক জীবনযাত্রায় অনেকেই জাঙ্ক ফুডের প্রতি আসক্ত। ফলস্বরূপ হুহু করে বাড়ছে ওজন। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য অনেকেই ওবিসিটি বা স্থুলতার মতো লাইফস্টাইল রোগে আক্রান্ত। সুস্থ আর ফিট থাকাই আধুনিক প্রজন্মের মূলমন্ত্র। লো ক্যালরি সমৃদ্ধ পটল খাই খাই ভাব কমিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণ থাকায় যে কোনো রকম সংক্রমক রোগ প্রতিরোধ করতে পারে পটল। চরক সংহিতায় বলা হয়েছে পটল আর পলতা পাতা (পটলের পাতা) মাদকাসক্তর সমস্যা দূর করে।

ক্ষতিকারক ব্যাড কোলেস্টেরল এলডিএলের মাত্রা কমিয়ে উপকারী এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় পটল।

★ আর্য়ূবেদে পটলের ব্যবহার-

১) পটলের দানা গুঁড়ো করে তাতে এক চিমটে হিং ও জল দিয়ে একটা জুস বানিয়ে খান। ফ্যাট বা চর্বি গলবে।

২) প্রতিদিন ২ টেবিল চামচ পলতা পাতার রস খেলে লিভারের রোগ সেরে যায়। ১ চামচ করে পলতা পাতার রস মধু ও গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ত্বকের সমস্যা দূর হয়।

৩) সপ্তাহে ৩ দিন ২০ মিলি লিটার পটলের রস খেলে রক্ত শুদ্ধ হয়।

৪) প্রতিদিন এক গ্লাস জলে পলতা পাতা ও শুকনো আদাগুঁড়ো একসঙ্গে ফুটিয়ে ছেঁকে দিনে ২ বার খেলে সর্দিকাশির সমস্যা দূর হয়।

৫) চুল পড়ার সমস্যা থাকলে টানা ২১ দিন মাথায় পলতা পাতার রস লাগান। চুল পড়ার সমস্যা কমবে, টাকে নতুন চুল গজাবে।

Related Articles