দাবদাহের জন্য কোনটা হিট স্ট্রোক বা কোনটা এক্সজশন বুঝবেন কিভাবে? লক্ষ্ণণ কী ? জানুন
Is it heat stroke or heat exhaustion? Know how to understand signs and symptoms of both

The Truth of Bengal: বর্তমান সময়ে সবার একটাই মাথা ব্যথা প্রচণ্ড গরম। উষ্ণায়নের আঁচে পুড়ছে পৃথিবী। আর সেই পৃথিবীর বাসিন্দাদের ত্রাহি ত্রাহি রব।বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি। আমাদের বেশিরভাগ মানুষকে তাপপ্রবাহের জ্বালায় ভুগতে হয়। এই পরিস্থিতিতে এখন প্রায়ই শোনা যাবে হিট স্ট্রোকের কথা। এবার অনেকেই হিট স্ট্রোকের সমস্যা সম্পর্কে জানেন না। এক্ষেত্রে প্রচণ্ড গরমে প্রায়শই শরীর ঠিকমতো ঠান্ডা হতে পারে না। আর শরীর নিজে থেকে ঠান্ডা হতে না পারলে বিপদ হয়। ফলে হিট স্ট্রোকের মতো নানা লক্ষণ দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা খুব বেড়ে যাওয়া, কিছু বুঝতে না পারা, কাঁপুনি পর্যন্ত হতে পারে। এবার অনেক সময় এর থেকে ব্যক্তি কোমায় চলে যান। এমনকী মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়াও সম্ভব।শুধু হিট স্ট্রোকই নয়,হিট এক্সজশনও ভোগায় মানুষকে।স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিনের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডাঃ এম ওয়ালি এই ঘটনায় ব্যাখা দিয়েছেন।তিনি জানিয়েছেন,বেশিরভাগ মানুষ হিটস্ট্রোক ও হিট এক্সজশনের পার্থক্য বোঝেন না। হিট এক্সজশন হলে ঘামের জন্য শরীর থেকে বেরিয়ে যায় নুন ও জল। নুন ও জল অনেকটা বেরিয়ে যেতে শুরু করলে দেখা দিতে পারে সমস্যা। এই সমস্যারই নাম হিট এক্সহউশন। এক্ষেত্রে অত্যধিক জল পিপাষা, মাথা ঘোরা, চোখে কমা দেখা, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হিট স্ট্রোক ও হিট এক্সজশনের পার্থক্য কোথায় ?
রোদ লাগার কারণে যখন শরীরে ডিহাইড্রেশন হয় তখন এই হিট এক্সজশন দেখা যায়। যারজন্য হৃদ স্পন্দন বেড়ে যায়। আরও বেশি করে রক্ত চলাচল শুরু হয় শরীরে। হয়তো আপনার শরীরের তাপমাত্রা নাও বাড়তে পারে।তাপমাত্রা দ্রুত ওঠানামা করতে থাকবে। হার্টের স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় থাকবে না। ব্যাহত হতে পারে হার্টের কাজ।এমনকি শরীরের পেশিগুলো কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। তাই হিট এক্সজশন থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে ঠান্ডায় থাকুন,বেশি করে জল খান,ইলেকট্রোরেট খেতে পারেন। হিট স্ট্রোকের বিষয়টি আবার আলাদা। শরীরের তাপমাত্রা খুবই বেড়ে যায়। এই সময় তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যেতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির খিঁচুনি হতে পারে। খুব ঘাম হবে,বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে,একইসঙ্গে মাথা ব্যথা হয় । এমনকি. আক্রান্ত ব্যক্তি সংজ্ঞাহীন পর্যন্ত হয়ে যেতে পারেন । হিট স্ট্রোক হলে কোনওরকম গাফিলতি চলবে না।সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।যাতে দ্রুত চিকিত্সা শুরু করা যায়।সময়ের মধ্যে চিকিত্সা শুরু হলে বাঁচতে পারে জীবন।
হিট এক্সজশনের লক্ষ্মণগুলো কী কী ? কিভাবে সারানো যাবে ?
হিট এক্সজশনের মূল লক্ষ্ণণ হল জল তৃষ্ণা পাওয়া, পেশির টান ধরতে পারে,বোধ হতে পারে ক্লান্তি।এছাড়াও গা বমিবমি ভাব অনুভূত হতে পারে। এই ধরণের প্রবণতা অবশ্য ততটা বিপদজনক নয়। এই রকম যদি আপনি অনুভব করেন তাহলে বিশ্রাম নিন,খেতে পারেন প্যারাসিটেমল,খেতে পারেন ইলেকট্রোলাইট। প্রয়োজনে পান করতে পারেন এনার্জি ড্রিঙ্ক। শরীরের এই অবস্থা হলে না গরম না ঠান্ডা অবস্থায় থাকার চেষ্টা করবেন।কখনই কফি, চা, অ্যালকোহল খাবেন না। প্রবীণ মানুষদের রক্তচাপ কমে যেতে পারে,বিশেষ করে যাঁরা ডায়ালিসিস রোগী বা হার্ট বাইপাস করা হয়েছে তাঁদের। এইসব ধরণের রোগীদের ভিটামিন ই,ডি,ম্যাগনেসিয়াম দেওয়ার চেষ্টা করবেন। নিয়মিত এইসব জিনিস শরীরে গ্রহণ করলে আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
হিট স্ট্রোকের লক্ষ্ণণ কী ? কিভাবে মোকাবিলা করবেন ?
হিট স্ট্রোকের জন্য শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।দেহের তাপমাত্রা ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে যেতে পারে।চামড় লাল হতে পারে।রোগী ডে-হাইড্রেড হয়ে পড়তে পারে।যার জন্য রক্তচাপ তলানিতে ঠেকতে পারে।তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব,মাথা ঘুরতে পারে,প্রসাব কমে যেতে পারে,হার্ট বিট লক্ষ্যণীয়ভাবে বেড়ে যেতে পারে।এমনও হতে পারে,রোগী সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়তে পারে।তাই তাঁকে আইস বাথ বা বরফ দিয়ে স্নান করানো হতে পারে।সেই অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নিয়ে যেতে হবে,যাতে আইভি ফ্লুইড পুশ করা যেতে পারে।যতক্ষণ ঘরে রাখবেন ততক্ষণ ঠান্ডা ঘরে পাখার নীচে রাখতে হবে।