বিরাটের সঙ্গে অনুষ্কার যখন তখন সফরে যাওযার প্রবণতা এবার কি বন্ধ হবে?
Will Anushka's tendency to travel with Virat stop now?

Truth Of Bengal: জয়ন্ত চক্রবর্তী: নয়ের দশকে জার্মানি ফুটবল দলের কোচ বার্তি ফোগস বিশ্বকাপ ফুটবলের সময়ওয়াগদের দলের সঙ্গে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে বহু সমালোচিত হয়েছিলেন। কে এই ওয়াগ? ওয়াগ হলেন ওয়াইফস এবং গার্লফ্রেন্ডসরা। জার্মান দলের ফুটবলাররা স্ত্রী এবং গার্লফ্রেন্ডদের বিশ্বকাপে না নিয়ে যেতে পেরে খুব হতাশ হয়েছিলেন। কয়েক দশক পরে ভারতীয় ক্রিকেট দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীরও সেই পথে হাঁটলেন। তাঁর সঙ্গে বৃহস্পতিবার বোর্ড কর্তা, নির্বাচক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান অজিত আগরকার এবং ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মার যে বৈঠক হয়েছে তারপর বোর্ড ক্রিকেটারদের জন্য যে গাইড লাইন ধার্য করেছে সেটি দেখে এই লেখার অবতারণা। নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে যে স্ত্রী এবং পরিবারকে (পড়ুন গার্লফ্রেন্ড) কোনও সফরে নিয়ে যাওয়াটা বাঞ্চনীয় নয়।
একান্ত যদি কোনও সফরে স্ত্রীদের নিয়ে যেতে হয় তাহলে তা হবে হেড কোচেরঅনুমোদন সাপেক্ষ। অর্থাৎ, বিরাট কোহলিকে এখন অনুষ্কা শর্মাকে সঙ্গে নিতে হলে সবুজ সংকেত নিতে হবে গৌতম গম্ভীরের। এতদ্বারা বিরাট কোহলি সেঞ্চুরি করলে অনুষ্কা শর্মার ফ্লাইং কিস ছোড়া বন্ধ না হলেও দলের সঙ্গে মহারানির মতো ভ্রমণ অবশ্যই বন্ধ হবে। ভারতীয় ক্রিকেট দলের ফার্স্ট লেডি, রোহিত শর্মার স্ত্রীর ও দলের সঙ্গে ভ্রমণের আধিকার খর্ব হবে। এর ফলে একটা জিনিস তো হবে, ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে সাম্যতা ফিরবে। কেউ আর নিজেকে প্রিভিলেজড ক্লাস বলে মনে করতে পারবেন না। অনুষ্কা শর্মা অথবা মিসেস রোহিত শর্মারা হাজারবার স্বামীদের খেলা দেখতে ঘরের মাঠে কিংবা বিদেশে যান কেউ আপত্তি জানাবে না।
ওঁদের পয়সা আছে যা খুশি করতে পারেন, তাতে আপত্তি করার কিছু নেই। কিন্তু, দলের সঙ্গে কেন? এর দ্বারা খেলোয়ারের মনোসংযোগ কি নষ্ট হয়না? এই নিয়ে বিতর্ক আছে, থাকবেও। কিন্তু তা সত্ত্বেও দলের মধ্যে সমন্বয় আনতে স্ত্রী পরিবার সঙ্গে না আনলেই কি ভাল হয়না? ম্যাচের শেষে যখন চুলচেরা ব্লিশ্লেষণ প্রয়োজন তখন বিরাট কোহলি সময় কাটাছেন কফি শপে কিংবা রোহিত শর্মা রিতিকা শর্মাকে নিয়ে কোনও ভারতীয় রেঁস্তোরায়– এই দৃশ্য তো বিরল নয়। কপিলদেবের আমলে ভারতীয় দলের পেস বোলার সুব্রত বন্দোপাধ্যায় আমাকে একবার বলেছিলেন, এ কেমন টিম? মাঠে খেলার শেষে আর কারও টিকি পাওয়া যায়না। যে যার ঘরের ভিতরে সিধিয়ে যান। আবার দেখা হয় পরদিন মাঠে! এটাকে কি টিম স্পিরিট বলে? ভারতীয় ক্রিকেট দলের অবস্থা এখন অনেকটাই এই রকম।
গৌতম গম্ভীর তাঁর পারফরমম্যান্সের জন্য সমালোচিত ঠিকই। কিন্তু গাইড লাইনে স্ত্রীদের সঙ্গে নেওয়া রদ করা এবং যে যত বড় ক্রিকেটারই হোননা তাঁরডোমেস্টিক ক্রিকেট খেলা বাধ্যতামূলক করার জন্যে গম্ভীরকে মনে রাখবে ক্রিকেট বিশ্ব।শুধু একটা জিনিস মানতে পারছিনা, গৌতমের সাপোর্ট স্টাফেব্যাটিং কোচ হিসেবে সীতাংশু কোটাকেরসংযোজন। কোটাক সৌরাষ্ট্রের হয়ে দীর্ঘদিন রঞ্জি খেলেছেন, নেতৃত্বে দিয়েছেন, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনি একজন কিংবদন্তি গুজরাট লায়ন্স দলের আইপিএল টিমের সহকারী কোচ-এ সবই ঠিক আছে। কিন্তু তিনি কখনও জাতীয় দলে খেলেননি। বিরাট কোহলি কিংবা রোহিত শর্মাকে তিনি ব্যাটিং শেখাবেন। ব্যাপারটি একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেল নাকি!