জুনিয়রদের অ্যাকাউন্টে প্রায় ২ কোটি টাকার উৎস জানতে চাওয়া কি অন্যায়?
Is it unfair to ask about the source of about 2 crore rupees in the account of juniors

Truth of Bengal: সেবা ধর্মের নামে ট্রাস্ট খুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আর সেই অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে প্রায় দু’কোটি টাকা। একেবারেই চমকে যাওয়ার মত সংখ্যাটা। তবে রটনা নয়, একেবারেই সত্যি। টাকার অঙ্কটা ১.৭ কোটি টাকা। এই ট্রাস্টের ডিড রয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের নেতা কিঞ্জল নন্দর নামে। আর অ্যাকাউন্ট হোল্ডার হিসাবে নাম রয়েছে অনিকেত মাহাতো, রাজদীপ শাহ ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়ের।
কলকাতার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক এইচডিএফসি-র হাইকোর্ট শাখায় অ্যাকাউন্ট খুলেছেন তাঁরা। অ্যাকাউন্ট নম্বর ৩২৫১। যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে ট্রাস্ট এর সেটি হল, রুম নম্বর ৩২,কেবি হোস্টেল, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ, ১ নম্বর ক্ষুদিরাম বোস সরণি, বিধান সরণি, কলকাতা-৪। সমাজসেবামূলক কাজের জন্য এনজিও তৈরি করেন তাঁরা। রক্তদান শিবির, স্বাস্থ্য শিবিরের মত সেবামূলক কাজের বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয় এনজিও তৈরিতে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট গত ১৩ সেপ্টেম্বর রেজিস্টার্ড অফ অ্যাসিওরেন্স দফতরে এই এনজিওর রেজিস্ট্রেশন করিয়েছে। আর তারপরে খোলা হয় ব্যাঙ্ক একাউন্ট। এক মাসের সামান্য বেশি সময়ের মধ্যেই অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ১ কোটি ৭০লক্ষ টাকা। এই বিপুল অঙ্কের টাকা কারা দিলেন? প্রশ্ন তুলে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সামাজিক মাধ্যমে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।
জুনিয়র চিকিৎসকদের অ্যাকাউন্টে ১কোটি ৭০ লক্ষ টাকার উৎস নিয়ে কৌতুহল থাকারই কথা। কারা এই টাকা তাদের ফান্ডে জমা করল? সেই টাকা কী খাতে ব্যয় করা হচ্ছে এই প্রশ্নগুলোর সামনে আসবেই। আরজি করের ঘটনার পর থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা টানা আন্দোলন চালাচ্ছেন। কার্যত রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। স্বচ্ছ প্রশাসনের দাবি জানাচ্ছেন, থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। সেই স্বচ্ছতার প্রশ্নেই জুনিয়র ডাক্তাররা কি নামের তালিকা প্রকাশ করবেন তাদের এই অর্থ কারা দিলেন? সামাজিক সেবামূলক কাজে এই সংগঠন। কোন কোন সেবামূলক কাজ তারা করেছেন তা কি জানাবেন? সেই সেবামূলক কাজে কত টাকা খরচ করা হয়েছে সেই স্বচ্ছতা প্রকাশ করবেন? সেবামূলক কাজের জন্য ফান্ড অন্য খাতে ব্যয় হচ্ছে না তো? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নগুলো সামনে আসছে।
যেখানে দুর্নীতিমুক্ত এবং স্বচ্ছতার ওপর বেশি জোর দিয়েছেন জুনিয়ার ডাক্তাররা, সেখানে তাদের স্বচ্ছতাও সবার আগে প্রয়োজন। আর তাই এই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করা উচিত। তাহলে মানুষের মনে যে প্রশ্ন উঠছে তা দূর হবে। আর জুনিয়র ডাক্তারদেরও স্বচ্ছ থাকাটা জরুরি।
তবে সরকারি হোস্টেলের ঠিকানা কেন এই এনজিওতে? এক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন নিয়েছেন তো তারা? যেখানে স্বচ্ছতার প্রশ্ন উঠছে সেখানে অস্বচ্ছ ভাবে যদি সরকারি ঠিকানা ব্যবহার হয় সেটিও অন্যায়। এখন দেখার কতটা স্বচ্ছ ভাবে সমস্ত তথ্য প্রকাশ করেন আন্দোলনের প্রধান মুখগুলি।