
Truth Of Bengal: অর্ক গোস্বামী: ‘ক্যানসার’ এই শব্দটি আপামর মানুষের কাছে এক বিপন্নতার প্রতীক। প্রতি মুহূর্তে এই অসহায়তার সামনে নতিস্বীকার করছে মানুষ। সংখ্যার নিরিখে প্রতি আট মিনিটে একজন ভারতীয়, নয় মিনিটে একজন আমেরিকান মৃত্যপথে যাত্রা করছে। তবে রাত্রি শেষে যেমন আলোর দেখা পাওয়া যায় তেমনই বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে অবশেষে এমআরএনএ ক্যানসার ভ্যকসিন মুক্তির বাতাস বয়ে এনেছে।
এমআরএনএ- ৪১৫৭ নামাঙ্কিত এই ভ্যকসিন গুণগত ভাবে একটি পার্সোনালাজইড ভ্যকসিন। এই জাতীয় ভ্যকসিন তৈরি করা হয় একজন রোগীর স্বাস্থ্যকে মাথায় রেখে যাকে বলে ‘টেইলার্ড মেড কাস্টমাইজড প্রডাক্ট’। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথমে যে রোগীর শরীরে এই ভ্যকসিনটি প্রয়োগ হবে তার বায়োপসি, সেল মিউটেশন এবং ইমিউনিটি সিস্টেমের ম্যপিং করা হয়!
সংশ্লিস্ট শরীরে ক্যানসার সেলের মিউটেশসনের ফলে কেমন প্রোটিন তৈরি হবে (যা প্রতিটা রোগীর ক্ষেত্রে আলাদা) এবং তাকে আটকাতে কী জাতীয় ভ্যকসিন দরকার সে সবটাই ছয় সপ্তাহের মধ্যে তৈরি করা যায়।
তবে এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হল বিপুল খরচ। বৃহত্তর অংশের সাধারণ মানুষের কাছে এই ভ্যকসিন কেনা প্রায় অসম্ভব। তবে বিজ্ঞানীরা ভেবেছেন যে সাধারণ উপসর্গ চিহ্নিত করার স্বার্থে রোগীর ক্যানসারের সেলের মিউটেশন প্রক্রিয়াটির বিশদ জেনে নেওয়া যাতে অপ্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিশেষত প্রথম স্তরে থাকা ক্যানসারের ক্ষেত্রে অযথা ভ্যকসিন ব্যবহার না হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রচলিত চিকিৎসার যেমন সার্জারি, কেমোথেরাপির মাধ্যমে একজন রোগী সুস্থ হয়ে উঠছে সেক্ষেত্রে এই ভ্যকসিন না ব্যবহার করলেও চলে।
উল্লেখ্য, ভ্যকসিন তৈরির জটিলতা এবং খরচসাপেক্ষেতাকে মাথায় রেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে একটি সাধারণ অর্থভাণ্ডার তৈরি করা যেতে পারে যা ইন্টারন্যশনাল ক্যানসার রিসার্চ ফান্ড এবং ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যশনাল ক্যানসার কন্ট্রোলকে নিয়মিত অর্থ জোগান দেবে। এর পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, ক্যানসার আজ এসব দেশেই সাধারণ সমস্যা এবং দেশ এইং জাতি ভেদে মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্য ভিন্ন। এমতবস্থায় সামগ্রিক ভাবে ক্যানসার শাপমোচনের উদ্দেশ্যে গবেষণায় বিকেন্দ্রীকরণ এবং সংলগ্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় বহুত্ববাদের উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন।