দেশ

হাথরস কাণ্ড: এখনও খোঁজ নেই অনেকের, প্রিয়জনকে খুঁজে চলেছেন আত্মীয়স্বজন

Hathras Stampede: Many are still missing, relatives are searching for their loved ones

The Truth Of Bengal :  উত্তরপ্রদেশের হাথরস। এ যেন বিভীষিকার নাম। এখনও আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে। এখনও যেন শোনা যাচ্ছে আর্তক্রন্দন। শোনা যাচ্ছে বাঁচাও বাঁচাও। শতাধিক প্রাণ চলে গিয়েছে। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরো অনেকে। মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এখনও খোঁজ নেই বহু মানুষের। তাদের আত্মীয়-স্বজনেরা দুর্ঘটনাস্থলে এখনও খুঁজে চলেছেন প্রিয়জনকে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমশ চড়ছে। উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা ক্ষোভের আগুন বিস্ফোরিত হতে পারে যে কোন সময়। যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম সেখানে কেন আগাম পুলিশি বন্দোবস্ত যথাযথ থাকবে না? প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবার ওই অনুষ্ঠানের সরকারি অনুমতি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। কিভাবে ওই অনুষ্ঠানের অনুমতি পেলেন স্ব’ঘোষিত বাবা? কত মানুষের সমাগম হওয়ার কথা ছিল? সেইমতো আগে থেকে কেন পুলিশি বন্দোবস্ত ছিল না? এই মর্মান্তিক ঘটনার পর কেন স্বঘোষিত ওই বাবার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি? এইসব নানান প্রশ্ন সামনে উঠে এসেছে। উত্তরপ্রদেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল সমাজবাদী পার্টি এই ঘটনার দায় পুরোপুরি বিজেপি শাসিত সরকারের ঘাড়ে চাপিয়েছে। শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের অব্যবস্থার কারণেই এই পরিণতি বলে অভিযোগ সমাজবাদী পার্টির।

এই ভয়াবহ ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চরমে। স্ব’ঘোষিত ভোলে বাবা কোন কোন রাজনৈতিক নেতার ঘনিষ্ঠ এই নিয়ে চলছে চাপানউতোর। দায় এড়িয়ে যাওয়ার সব ধরনের প্রয়াস চলছে। ইতিমধ্যে উত্তর প্রদেশ পুলিশ অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজকদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। তবে কড়া পদক্ষেপ এখনো নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অনুষ্ঠান শেষ করে ওই স্বঘোষিত বাবা যখন চলে যাচ্ছিলেন তখন হাজার হাজার মহিলা গাড়ির সামনে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। এমনকি অনেকে গাড়ির টায়ারের সামনের ধুলো সংগ্রহ করতে চেষ্টা করেন। বহুদূর পর্যন্ত মহিলারা গাড়ির পিছন পিছন ছুটে যান। অনেকেই হাইওয়ে পার হয়েছিলেন। সেই সময় ভিড়ের চাপে ড্রেনে পড়ে যান অনেকে। সবাই গাড়ির কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে গেলেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে ৮০ হাজার মানুষের অনুমতি নেওয়া ছিল এই অনুষ্ঠানের জন্য। সেখানে আড়াই লক্ষের বেশি মানুষ জমায়েত হন। এই বিরাট ভিড় সামলানো অসম্ভব হয়ে ওঠে। অভিযোগ, এত বিশাল ভিড় সামলানোর মতো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না।
নিকটবর্তী শহরের আলিগড়ের প্রধান হাসপাতালে ভিড় নিয়েছেন বহু মানুষ। খুঁজে চলেছেন প্রিয়জনকে। অনেকেই বলছেন তাদের আত্মীয়কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ওই ঘটনার পর থেকে।

এদিকে বিতর্কে উঠে এসেছে স্বঘোষিত ভোলেবাবার নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে। পুলিশের ইউনিফর্ম পরা বিশেষ বাহিনী নিযুক্ত ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাদের অধিকাংশই মহিলা। দুর্ঘটনার সময়ের যে ভিডিও সামনে এসেছে সেখানে ভোলেবাবার নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীদের দেখা যায়। এই ধরনের নিরাপত্তা লক্ষ্মী রাখার কোন অনুমোদন ছিল কিনা তা প্রশ্নের মুখে। এই নিয়ে বিতর্ক চরমে পৌঁছেছে।