
The Truth of Bengal: ঢাক আর বাদ্যির তালে মুখর উৎসবের রেশ এখনও কাটেনি। মাতৃমূর্তি না থাকায় মণ্ডপে- মণ্ডপে শূন্যতা দেখা যায়। বিষাদ আর মন খারাপের আবহের মাঝেই শুক্রবার রেডরোডে আয়োজন করা হয় মেগা পুজো কার্নিভ্যাল। ইউনেস্কোর হেরিটেজ অলঙ্কার মেলার পর বাঙালির একান্ত আপন উত্সবকে উদযাপনে আলাদা আবেগ লক্ষ্য করা যায়। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস আর উল্লাসকে সঙ্গী করে শুক্রবার বিকেল ৪টের আগেই শুরু হয়ে যায় কার্নিভ্যাল।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।নজরকাড়া নৃত্য পরিবেশন করেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ট্যুপ। অংশ নেয় শতাধিক পুজো কমিটি।প্রতিটি পুজো কমিটির পারফরমেন্সের জন্য বরাদ্দ করা হয় ২মিনিট।সুর-তাল-ছন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে মঞ্চ।অতিথি-অভ্যাগতদের বসার সুব্যবস্থার মতোই সুশৃঙ্খল আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতো।প্রাণের উত্সবের অন্তিম পর্বে মাটির ছোঁয়া লাগা লোকসুর থেকে বাংলার সনাতনী নানা সুর অনুষ্ঠানের উপস্থাপনকে জমিয়ে দেয়।
ভিআইপি সহ ২০হাজারের ওপর দর্শক,রেডরোডের ঐতিহাসিক ভূমিতে মিলিত হন।স্ফীত জনজোয়া র যেন জানান দিচ্ছিল ব্রাজিলের রিও কার্নিভ্যাল,. চীনের ‘হারবিন ইন্টারন্যাশনাল আইস অ্যান্ড স্নো ফেস্টিভ্যাল’বা জার্মানির মিউনিখ শহরের শতাব্দি প্রাচীন অক্টোবর ফেস্টকে পিছনে ফেলতে তৈরি বাঙালির স্বাদের উত্সব। ২০১৯এ এই পুজো কার্নিভ্যালের আয়োজন করা হয়,দুবছর বন্ধ থাকার পর বাইশে হয় এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।আর তেইশের কার্নিভ্যালে কানায় কানায় মানুষের উপস্থিতি বুঝিয়ে দিচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভাতৃত্ব একাকার করতে পারে একমাত্র কলকাতা।কেউ কেউ বলছেন,গুরুদেবের কথা যেন সার্থক রূপ পেল।তাই তাঁরা বলছেন, দিবে আর নিবে মিলাবে মিলিবে যাবে না ফিরে এই মহামানবের সাগর তীরে।
ধর্মীয় সঙ্কীর্ণতাকে বিসর্জন দিয়ে উদারতার আলোয় শহর যেভাবে উদ্ভাসিত হল তাতে বিশ্ববাসীও আপ্লুত।কার্নিভালের জন্য দুপুর ২টো থেকে যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়।ছিল পর্যাপ্ত পুলিশ। অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত রেড রোড, লাভার্স লেন, কুইন্সওয়ে, প্ল্যাসে গেট রোড ও এসপ্ল্যানেড পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। খিদিরপুর রোডে হেস্টিংস ক্রসিং থেকে লাভার্স লেন পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে। সবার সুবিধার জন্য মুক্তমঞ্চে রংবাহারি অনুষ্ঠান যেমন চলে তেমনই জায়ান্ট স্ক্রিনে শহরবাসীকে রঙিন উদযাপন দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়।কার্নিভালের জন্য শুধু রেড রোডে ছিল ৫০০ পুলিশ, রাস্তায় ট্র্যা ফিক নিয়ন্ত্রণে থাকে ২০০০ পুলিশ, ১৬ জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক। ৮ জন জয়েন্ট সিপি পদমর্যাদার।রাখা হয় চারটি ওয়াচ টাওয়ার। বালির বস্তার তৈরি বাঙ্কার রাখা হয়। কার্নিভ্যালের পর বিসর্জনের জন্য ঘাটগুলির নিরাপত্তা-র নজরদারি বহাল রাখে প্রশাসন।
Free Access