দেশ

বাজেট ২০২৫: মুদ্রা লোন থেকে মেডিক্যাল টুরিজম, পর্যটন ও মধ্যবিত্তের স্বার্থে নতুন উদ্যোগ

Budget 2025: From currency loans to medical tourism, new initiatives for the benefit of tourism and the middle class

Truth Of Bengal: নতুন অর্থবর্ষের জন্য কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবারের বাজেট পেশ করেছেন অত্যন্ত সংযতভাবে। দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করতেই এই বাজেট গঠন করা হয়েছে, যেখানে মধ্যবিত্তের হাতে নগদ বৃদ্ধি এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশ-কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই আশানুরূপ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

পর্যটন শিল্পে বড়সড় ঘোষণা

পর্যটন খাতের বিকাশের লক্ষ্যে এবারের বাজেটে কেন্দ্র বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

হোম স্টে ব্যবসায়ীদের জন্য মুদ্রা লোন

পর্যটন খাতের অন্যতম প্রধান ঘোষণা হলো হোম স্টে ব্যবসায়ীদের জন্য মুদ্রা লোন প্রকল্প চালু করা। এর ফলে দেশের বিভিন্ন পর্যটনস্থলে গড়ে ওঠা ছোট ছোট হোম স্টেগুলিকে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হবে, যাতে তারা তাদের পরিকাঠামো আরও উন্নত করতে পারে।

  • সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে, যা স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে পরিশোধযোগ্য হবে।
  • এই প্রকল্পের আওতায় হোম স্টেগুলিকে আরও আধুনিক করা হবে, যাতে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের থাকার অভিজ্ঞতা আরও উন্নত হয়।
  • পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

৫০টি পর্যটন কেন্দ্রের আধুনিকীকরণ

পর্যটন শিল্পকে আরও উন্নত করতে কেন্দ্র ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র-কে নতুনভাবে সাজানোর ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে থাকবে—

  • আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংযোজন
  • পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নয়ন
  • স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীদের জন্য প্রশিক্ষণ ও সহায়তা
  • মেডিক্যাল টুরিজমের বিকাশ

ভারতে চিকিৎসা পরিষেবা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অত্যন্ত সমাদৃত। এই বাজেটে মেডিক্যাল টুরিজম-কে গুরুত্ব দিয়ে বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা এবং ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতা দূর করার মাধ্যমে এই খাতকে আরও প্রসারিত করা হবে।

মধ্যবিত্তের জন্য ‘উড়ান’ প্রকল্পের সম্প্রসারণ

পর্যটনের পাশাপাশি, মধ্যবিত্তদের স্বল্প খরচে যাতায়াতের সুবিধা দিতে সরকার ‘উড়ান’ প্রকল্প সম্প্রসারিত করার ঘোষণা করেছে।

  • আগামী ১০ বছরে ১২০টি নতুন পর্যটন কেন্দ্র যুক্ত হবে, যেখানে কম খরচে বিমান পরিষেবা চালু করা হবে।
  • প্রায় ৪ কোটি মানুষ এই নতুন উদ্যোগের ফলে স্বল্প খরচে বিমানে যাতায়াত করতে পারবেন।
  • পার্বত্য অঞ্চলে ছোট ছোট হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হবে, যাতে দুর্গম অঞ্চলে দ্রুত যাতায়াত সম্ভব হয়।

এই উদ্যোগের ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল আরও বাড়বে এবং সাধারণ মানুষও কম খরচে বিমানে ভ্রমণ করতে পারবেন।

বাংলার পর্যটন খাতে প্রভাব

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগে থেকেই রাজ্যের পর্যটন খাতের উন্নয়নে জোর দিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে হোম স্টে ব্যবসা-কে তিনি বারবার গুরুত্ব দিয়েছেন এবং এর পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য সরকার থেকে সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছেন। এবার কেন্দ্রও সেই একই পথে হাঁটল।

  • বাংলার পর্যটনস্থল যেমন দার্জিলিং, সুন্দরবন, ডুয়ার্স, বিষ্ণুপুর, মুকুটমণিপুর, বকখালি-তে হোম স্টেগুলির পরিকাঠামো আরও উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলো।
  • মুদ্রা লোন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের পর্যটন ব্যবসায়ীরাও সরাসরি সুবিধা পাবেন।
  • ‘উড়ান’ প্রকল্পের সম্প্রসারণের ফলে কলকাতা এবং অন্যান্য শহর থেকে সহজে বিভিন্ন পর্যটনস্থলে যাতায়াত সম্ভব হবে।

Related Articles