আর্থিক টেনশন শারীরিক অসুস্থতার অনুঘটক
Financial stress is a catalyst for physical illness

Truth Of Bengal: বিপ্লব চৌধুরী: আর্থিক দুশ্চিন্তা তথা আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ফারাক ডেকে আনছে শারীরিক অসুস্থতা। বলা যায় রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে প্রায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে কাজের সুযোগের অভাব, কম বেতন, নানা ধরনের ঋণ, ইএমআই, স্টুডেন্টস লোন, বাড়ি ভাড়া- এই সবকিছুর চিন্তা ও অর্থ জোগানের টানাটানি ব্যক্তিকে নিয়ে যায় শারীরিক অসুস্থতার দিকে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ গবেষক দলের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে আর্থিক দুশ্চিন্তা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটায় শারীরিক অসুখের যা কিনা অন্য সব টেনশন থেকে বহুগুণ অধিক। একটি পুরনো জনপ্রিয় হিন্দি গানের কলি ‘দ্যা হোল থিং ইজ দ্যাট / কে ভাইয়া সবসে বড়া রুপাইয়া’- এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতেই পারে। ক্রমাগত আর্থিক দুশ্চিন্তা শরীরের ভিতরে নানা জৈব রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায়, ফলে রক্তে কর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিন মিশে শারীরিক সুস্থতায় ব্যাঘাত ঘটায়। মানসিক অবসাদ দিয়ে শুরু হলেও এই আর্থিক দুশ্চিন্তা ডেকে আনে আরও নানা রোগ, যথাক্রমে উচ্চরক্তচাপ, মাথা ব্যথা, নিদ্রাহীনতা, আর্থাইটিস, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট এবং অকালমৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও সাম্প্রতিক কয়েকটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, আর্থিক অনটনের জন্য ৪৪ শতাংশ ভারতীয় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যায় ভোগেন, ৩০ শতাংশ উচ্চরক্তচাপে এবং ৯ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসে। ফলস্বরূপ ভারতের প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যক্তির স্বাস্থ্য খাতের খরচ ‘আউট অফ পকেট’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি স্তর থেকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে ধৈর্য্য হারালে চলবে না। যতটুকু সম্ভব আয়ের একটা অংশ সঞ্চয় করতেই হবে যাতে আর্থিক দুর্দশার সময় কিছুটা মোকাবিলা অন্তত করা যায়। শুনতে অবাক লাগলেও ২০২৪ সালের ফিন্যান্সিয়াল হেলথ নেটওয়ার্কের স্টাডি অনুযায়ী ‘মাইন্ডফুলনেস প্রাকটিস’ অর্থাৎ যোগা, শারীরিক কসরৎ এক্ষেত্রে মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে সাহায্য করে এইরূপ আর্থিক দুর্দশার দিনে, মাথা ঠান্ডা থাকলে সমস্যা সমাধানের পথও খুঁজে পাওয়া যায়।